dalit rape

দলিত ধর্ষণের প্রভাব বিহারে? চিন্তায় বিজেপি

বিজেপির অনেক নেতার মতে, হাথরসের ঘটনায় যোগী আদিত্যনাথ সরকারের পুলিশ ও প্রশাসনই বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২০ ০৩:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

হাথরসে দলিত কন্যার গণধর্ষণ ও মৃত্যুর পরে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে দলিত সমাজের ক্ষোভ বিহারের ভোটেও ছাপ ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই তাঁরা চিন্তিত। আবার দলিতদের সুবিচার পাইয়ে দিতে গিয়ে ঠাকুর সম্প্রদায়ের সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে বলেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে উচ্চ বর্ণের মধ্যে।

Advertisement

বিজেপির অনেক নেতার মতে, হাথরসের ঘটনায় যোগী আদিত্যনাথ সরকারের পুলিশ ও প্রশাসনই বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পুলিশ ও প্রশাসনের বড়কর্তাদের দোষ দেওয়া যায় না। কারণ তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশেই যে কাজ করছিলেন, তা স্পষ্ট। গোটা দেশে দলিতদের সংখ্যা জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ১৬ ভাগ। কিন্তু বিহারে দলিতদের হার ১৮ শতাংশ। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, দলিত ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে বিজেপির নতুন তফসিলি মোর্চার প্রধান লাল সিংহ নিজে যোগীকে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন। বিজেপি নেতাদের মতে, মাঝরাতে ডিজেল ঢেলে দলিত তরুণীর দেহ জ্বালিয়ে দেওয়ায় ভুল বার্তা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ইতিহাসের ‘প্রবীণ’ ছাত্র যখন হাথরসের বর্তমান ‘ভিলেন’

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের এক প্রবীণ বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় যোগী সরকার জেলার পুলিশ সুপারকে সাসপেন্ড করেছে। কিন্তু এই পুলিশ সুপারের নেতৃত্বেই ঘটনার পরে চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সমস্যার শুরু হয়েছে রাতদুপুরে তরুণীর দেহের সৎকার করতে গিয়ে। পরিবারের লোকেদের তালাবন্দি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে। এর ফলেই দলিতদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।’’

শনিবার সকালে আগরায় দলিত বাল্মিকী সমাজের সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ বাধে। আদিত্যনাথ নিজে ঠাকুর পরিবারের সন্তান। দলিতদের ক্ষোভ উস্কে দিতে বিরোধীরা তা মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অথচ ঠাকুরদের মধ্যেও যোগী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। হাথরসের আশেপাশের প্রায় দু’ডজন গ্রামের ঠাকুরদের সবর্ণ সমাজেও পঞ্চায়েত বসেছিল শুক্রবার। সেখানে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের ছেলেদের মুক্তি দেওয়া হোক। কারণ ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী ধর্ষণ হয়নি বলে পুলিশই জানিয়েছে।

আরও পড়ুন: প্রিয়ঙ্কার রণে ‘দাদির তেজ’, পোশাকে টান দিল ‘বীরপুরুষ’​

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি এইচ সি অবস্থী আজ দাবি করেছেন, মাঝরাতে দেহ সৎকারের সিদ্ধান্ত স্থানীয় পুলিশের ছিল। কিন্তু বিজেপি নেতারা বলছেন, এখন চাপে পড়ে নিচুতলার উপরে দায় চাপানো হচ্ছে। বিজেপি নেতাদের এই ক্ষোভই দলের প্রবীণ নেত্রী উমা ভারতীর মুখে শোনা গিয়েছে। রামমন্দির আন্দোলনে বিজেপির সঙ্গী শিবসেনা আজ যোগী সরকারকে নিশানা করে বলেছে, ‘উত্তরপ্রদেশে রামরাজ্য নয়, জঙ্গলরাজ চলছে।’

চার বছর আগে আরএসএসের অঙ্গুলিহেলনেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে যোগী আদিত্যনাথকে বসানো হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যোগীর ‘সমীকরণ’ নিয়ে বিজেপির অন্দরে জল্পনা ছিলই। অনেকেই মনে করেন, উত্তরপ্রদেশের মতো বিরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সাফল্য পেলে আগামী দিনে যোগী প্রধানমন্ত্রীর পদের দাবিদার হিসেবে উঠে আসতে পারেন। সম্প্রতি মোদী নিজেই করোনা মোকাবিলার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগীর প্রশংসা করেছেন। রামমন্দিরের শিলান্যাসে মোদী-যোগীর মধ্যে রসায়নের প্রতিফলন দেখা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement