ভিএইচপির সভায় ঘৃণাভাষণ। প্রতীকী ছবি।
ঘৃণাভাষণের সব সীমা পার হল রবিবার। রাজধানী দিল্লিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভায় বক্তারা প্রকাশ্যে হুমকি দিলেন, হাত কেটে, গলা নামিয়ে দেওয়ার। লাইসেন্সের পরোয়া না করে বন্দুক রাখারও আবেদন করা হয়।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সেই সভায় বক্তা হিসেবে ছিলেন জগৎ গুরু যোগেশ্বর আচার্য। তিনি বলেন, ‘‘যদি দরকার হয়, হাত কেটে নাও। গলা নামিয়ে দাও। সবচেয়ে বেশি তোমার জেল হবে। কিন্তু এই সমস্ত লোককে উচিত শিক্ষা দেওয়ার সময় এসেছে। বেছে বেছে মারো।’’
সভার অন্য এক বক্তা, মহন্ত নওলকিশোর দাস মানুষকে লাইসেন্সের পরোয়া না করে বন্দুক রাখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘‘বন্দুক জোগাড় করুন। যদি লাইসেন্স না থাকে তা হলে ভয় পাবেন না। যাঁরা আপনাকে খুন করতে আসবে, তাঁদের হাতে কি লাইসেন্স করা রিভলবার থাকবে? তা হলে আপনার কেন লাইসেন্স লাগবে?’’ তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে এর পর তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি সবাই একজোট হই, তা হলে দিল্লি পুলিশের কমিশনারও আমাদের ডেকে চা খাওয়াবেন এবং আমরা যেটা করতে চাই তা করতে দেবেন।’’
বক্তারা কি সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করে গেলেন না? এই প্রশ্নের জবাবে অবশ্য বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র বিনোদ বনসল জানান, এটি একটি ‘জন আক্রোশ সভা’। যা যা বলা হয়েছে তা সবই জেহাদিদের বিরুদ্ধে। কোনও একটি সম্প্রদায়কে নিশানা করে কিছু বলা হয়নি। মানুষ রেগে আছেন। ওঁরা যা বলতে চেয়েছেন তা হল, জেহাদিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজন হলে মানুষ নিজেরাই আত্মরক্ষা করবেন।
প্রসঙ্গত, ক’দিন আগে দিল্লিতে ২৫ বছরের এক তরুণের মৃত্যু হয়। তাঁকে খুন করা হয়েছে এই অভিযোগ তোলে হিন্দুত্ববাদীদের একটি অংশ। যদিও খুনের সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনও সম্পর্ক নেই বলে শুরু থেকেই দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তরুণের ফোন চুরি গিয়েছিল এক বছর আগে। থানায় তার অভিযোগও জানিয়েছিলেন ওই তরুণ। সেই অভিযোগ তুলে নিতেই কয়েক জন তাঁর উপরে হামলা করেন। পুলিশ মনে করছে, হামলাকারীরা সকলেই মোবাইল ছিনতাইবাজের পরিচিত।