Haryana

হরিয়ানায় ত্রিশঙ্কু? দিনের শেষেও উত্তর মিলল না, ‘কিংমেকার’ জেজেপি

যাবতীয় অঙ্ক যে এ ভাবে পাল্টে যাবে, আগে থেকে তা আঁচ করতে পারেনি বিজেপি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চণ্ডীগড় শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:৪১
Share:

কার হাত ধরবে জেজেপি, জল্পনা অব্যাহত। —ফাইল চিত্র।

দিনের শেষে হরিয়ানা বিধানসভার অবস্থা ত্রিশঙ্কুই হয়ে রইল। বিজেপি বা কংগ্রেস, দুই জাতীয় দলের কেউই ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পারেনি সেখানে। এক দিকে ৪০ পেরোতে হিমশিম খাচ্ছে গেরুয়া শিবির। অন্য দিকে, ৩০-এর ঘরেই ওঠানামা করছে কংগ্রেস। তবে অপ্রত্যাশিত ভাবে তাদের মধ্যে ‘কিংমেকার’ হিসেবে উঠে এসেছে স্থানীয় জননায়ক জনতা পার্টি (জেজেপি)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে তারা। সরকার গড়তে গেলে জেজেপি-র হাত ধরা ছাড়া উপায় নেই কংগ্রেস বা বিজেপি, কারওরই।

Advertisement

যাবতীয় অঙ্ক যে এ ভাবে পাল্টে যাবে, আগে থেকে তা আঁচ করতে পারেনি বিজেপি। তাই ভোটের দিনও আত্মবিশ্বাস ধরা পড়েছিল মনোহরলাল খট্টরের গলায়। বিরোধীদের সরাসরি ‘হেরো’ বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। ফলাফল ঘোষণার আগেই বিজেপির প্রতাপে ময়দান ছেড়ে বিরোধীরা পালিয়েছে বলে কটাক্ষ করেছিলেন। তবে এ দিন ফলাফলের প্রবণতা সামনে আসার পরই ছবিটা আমূল পাল্টে যায়। নিজে থেকে ইস্তফা দিতে চান রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুভাষ বরালা। যাবতীয় কর্মসূচি ফেলে মনোহরলাল খট্টরকে দিল্লিতে ডেকে পাঠান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

বিজেপি সূত্রে খবর, বহু কাঠখড় পুড়িয়ে ২০১৪-য় ক্ষমতায় এলেও, গত পাঁচ বছরে হরিয়ানায় মনোহরলাল খট্টর সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। সব কিছু দেখেও, পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরেও। এমনকি, দুষ্যন্ত চৌটালার নেতৃত্বে মাত্র কয়েক মাস আগে গড়ে ওঠা জেজেপি-ই যে বিজেপির ভোট কেটেছে, এমন দাবিও করছেন কেউ কেউ। তবে শেষ মুহূর্তেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মনোহরলাল খট্টর। ভোটের ফলাফলের প্রবণতা স্পষ্ট হতেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়ে নেন তিনি। জেজেপি-র সঙ্গেও কথাবার্তা চলছে বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক আলোচনার পর দুষ্যন্ত চৌটালার দল তাদের সমর্থন দিতে রাজি হয়েছে বলেও দলীয় সূত্রে খবর। তবে এ নিয়ে জেজেপি-র তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

Advertisement

আরও পড়ুন: যে মুখ্যমন্ত্রী করবে, তাকেই সমর্থন, হরিয়ানায় ত্রিশঙ্কুর ইঙ্গিত মিলতেই ঘোষণা দুষ্যন্ত চৌটালার​

অন্য দিকে, নির্বাচনী প্রচার নিয়ে গা-ছাড়া মনোভাব দেখালেও, ভোটের ফলাফলের প্রবণতা দেখে নতুন করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে কংগ্রেস। তাই এ দিন সন্ধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ হরিয়ানাবাসীকে সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানালে ফুঁসে ওঠেন কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তিনি বলেন, ‘‘মানুষের রায় মাথা পেতে নিচ্ছি আমরা। কিন্তু আজ নৈতিক ভাবে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং দলের নেতৃত্ব বাস্তব থেকে অনেক দূরে।’’

তবে ২০১৪-র বিধানসভা নির্বাচন এবং এ বছর লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া ঝড়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়েও, হরিয়ানায় কংগ্রেস যে ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহকেই তার সিংহভাগ কৃতিত্ব দিচ্ছে রাজ্য কংগ্রেসের একাংশ। জমি বণ্টন কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় এখনও পর্যন্ত নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে প্রবীণ এই রাজনীতিককে। তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় ভর করেই, বিজেপিকে কোণঠাসা করে দেওয়া গিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী খট্টরকে দিল্লিতে তলব অমিতের, ইস্তফা দিতে চাইলেন হরিয়ানার বিজেপি প্রধান​

কিন্তু দলে হুডার প্রতিদ্বন্দ্বী অশোক তনওয়ার রাহুলের ঘনিষ্ঠ। তাই হুডাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে রাহুল রাজি হবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আবার সরকার গড়তে গেলে জেজেপি-কে দরকার কংগ্রেসের। আগেই মুখ্যমন্ত্রী পদটি দাবি করেছে জেজেপি। দলের সুপ্রিমো দুষ্যন্ত চৌটালার সঙ্গে হুডার ছেলে দীপেন্দ্রর সম্পর্ক ভাল হলেও, তার জন্য দুষ্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দাবি থেকে পিছু হটবেন বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ধারণা, বরং বিজেপির হাত ধরে উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দিকে ঝুঁকতে পারেন দুষ্যন্ত।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement