হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। —ফাইল চিত্র।
গোষ্ঠী হিংসার ঘটনায় এখনও থমথমে হরিয়ানার বেশ কয়েকটি এলাকা। ব্যাহত নাগরিক জীবন। এর মধ্যেই আজ রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিশ এবং সেনা দিয়ে প্রতিটি মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব নয়। গত পরশু রাজ্যে যে হিংসা ছড়িয়েছিল তাতে এখনও পর্যন্ত ছ’জন প্রাণ হারিয়েছেন। হরিয়ানা হিংসার জেরে দিল্লিতে আজ প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দল। তা বন্ধের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হলে, বেনজির পদক্ষেপ করেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এই বিষয়ে জরুরি শুনানির জন্য বেঞ্চ গঠন করেন তিনি। ওই বেঞ্চের নির্দেশ, হিংসা রুখতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ব্যবস্থা নিতে হবে ঘৃণাভাষণের ক্ষেত্রেও।
হরিয়ানার নুহয়ে গত পরশু ভিএইচপি-র জলাভিষেক যাত্রা-কে ঘিরে অশান্তি ছড়িয়েছে দিল্লি সংলগ্ন গুরুগ্রাম-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী খট্টর জানান, আজ রাজ্যে নতুন করে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। তবে হিংসার ঘটনা ঘটলে তাঁর সরকার যে প্রাণহানি রুখতে পারবে—এমন নিশ্চয়তা দিতে নারাজ বিজেপির এই মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘সেনা এবং পুলিশ প্রতিটি মানুষকে রক্ষা করতে পারে না। এ নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়...। আমরা কেন্দ্রের কাছে আরও চার কোম্পানি নিরাপত্তা বাহিনী চেয়েছি।’’ তিনি জানিয়েছেন, যারা এই হিংসার সঙ্গে জড়িত তারা কোনও ভাবেই ছাড় পাবে না। গত কাল খট্টর দাবি করেছিলেন, এই হিংসার পিছনে ‘বড় ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। আজ তিনি বলেন, ‘‘এই হিংসার পিছনে বহিরাগতদের জড়িত থাকার বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।’’ এখনও পর্যন্ত ১১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেন্দ্র ২০ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী পাঠিয়েছে হরিয়ানায়।
আজ দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ভিএইচপি ও বজরং দল যে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল, তা বন্ধের জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন সাংবাদিক শাহিন আবদুল্লা। তাঁর আইনজীবী সি ইউ সিংহ প্রধান বিচারপতির বেঞ্চকে বলেন, ‘‘২৩টি প্রতিবাদী মিছিল রাজধানীর দিকে আসছে। পড়শি রাজ্যে হিংসা চলছে। বিষয়টি শোনা খুবই জরুরি।’’ সেই সময় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ নিয়ে মামলার শুনানি চলছিল। তা স্থগিত করে ওই আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কাগজপত্র দিন। আমরা অবিলম্বে (মামলাটি নথিভুক্ত করার) নির্দেশ দিচ্ছি।’’ এর পরে বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি এস ভি এন ভাটির বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি। ওই বেঞ্চ বলেছে, ‘‘আশা করি, রাজ্য সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলি কোনও সম্প্রদায় সম্পর্কে ঘৃণার ভাষণ রুখতে ব্যবস্থা নেবে। হিংসা রুখতে এবং জনসাধারণের সম্পত্তিহানি আটকাতে প্রয়োজন মতো পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।’’ ভিএইচপি ও বজরং দলের বিক্ষোভে স্থগিতাদেশ না দিলেও স্পর্শকাতর এলাকায় সিসিটিভি লাগাতে নির্দেশ দেয় বেঞ্চ।