জেডিএস নেতা এইচ ডি দেবগৌড়া।—ফাইল চিত্র।
বিজেপি কর্নাটকের জোট সরকার ফেলে দিতে তৎপর হতেই, লোকসভার আসন বণ্টন নিয়ে কংগ্রেসের উপরে চাপ বাড়ানো শুরু করল জেডিএস।
আসন ভাগ নিয়ে ইতিমধ্যেই জেডিএস নেতা এইচ ডি দেবগৌড়ার সঙ্গে একাধিক বার আলোচনা করেছেন রাহুল গাঁধী। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল এ রাজ্যে ২৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে জেডিএস লড়বে ১০টিতে। ১৮টিতে কংগ্রেস। কিন্তু বছরের শেষ দিনে হঠাৎ বেঁকে বসেন জেডিএস নেতা দেবগৌড়া। দাবি করেন ১২টি আসন। এ ছাড়া রায়চুর, বিদর, কোলার বা মহিশূরের মতো জেতা আসনগুলিও ছেড়ে দেওয়ার জন্যও কংগ্রেসকে শর্ত দেন তিনি। জেডিএসের রাজ্য সভাপতি এইচ বিশ্বনাথ বলেছেন, ‘‘দল রাজ্যে অন্তত ৫-৬টি আসনে জেতার অবস্থায় রয়েছে। তবে জনভিত্তি বাড়াতে বেশি আসনে লড়বে দল। হয় দেবগৌড়ার শর্তে জোট হবে, নয়তো কংগ্রেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হবে।’’
কেন হঠাৎ এই চাপ? কংগ্রেস সূত্র বলছে, সময় বুঝেই চাল চেলেছেন দেবগৌড়া। জেডিএস-কংগ্রেসের জোট সরকারকে ফেলতে সম্প্রতি তৎপর হয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী রমেশ জারকিহোলি গা-ঢাকা দিয়েছেন। রাজ্য কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা সিদ্দারামাইয়ার স্বীকারোক্তি, রমেশ কোথায় তাঁর জানা নেই। বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে তিনি বলেছেন, ‘‘বিধায়ক পিছু ২৫-৩০ কোটি টাকা দিতে চাইছে বিজেপি। সরকার ফেলতে প্রবল ভাবে সক্রিয় রয়েছে মোদীর দল।’’ কংগ্রেস মনে করছে, জেডিএস-কংগ্রেসের সরকারের অস্তিত্ব বিপদের মুখে বুঝেই আগেভাগে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে চাইছেন জেডিএস নেতা। এমনকি কংগ্রেস যে সব এলাকায় শক্তিশালী, সেখানকার টিকিটও চেয়ে রেখেছেন দেবগৌড়া। তিনি ভাল করেই জানেন, কংগ্রেসের পক্ষে ওই আসনগুলি ছাড়া কঠিন। জেতা সাংসদেরা এতে রাজি হবেন না। সে ক্ষেত্রে দলে ভাঙনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। কংগ্রেসের এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘লোকসভা নয়। আসলে এখন থেকেই বিধানসভা ভোটের কথা ভেবে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন দেবগৌড়ারা। অল্প-অল্প করে কংগ্রেসের ঘরে সিঁদ কাটা শুরু করতে চাইছে জেডিএস।’’
সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হলে ১৫ জানুয়ারি কর্নাটকে গিয়ে রাহুল বৈঠকে বসবেন দেবগৌড়া ও কুমারস্বামীর সঙ্গে। জেডিএস আপাতত বেসুরে বাজলেও, রাহুলের হস্তক্ষেপে তাঁদের সঙ্গে আসন রফার জট খোলা সম্ভব হবে বলেই
আশা কংগ্রেসের।