জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ। রবিবার গুরুগ্রামে। ছবি: পিটিআই।
সাত বছরের শিশু প্রদ্যুম্ন ঠাকুরের হত্যা নিয়ে আজও উত্তপ্ত থাকল গুরুগ্রাম। আজ সকালে রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। স্কুল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে থাকা একটি মদের দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। বিক্ষোভারীদের অভিযোগ, অবসর সময়ে আকছার ওই দোকান থেকে মদ কিনে খান স্কুলের বাসচালক আর খালাসিরা। পরিস্থিতি সামলাতে আসে পুলিশের বিশাল বাহিনী। আটক করা হয়েছে ২০ জন বিক্ষোভকারীকে। পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন ঘটনার ছবি তুলতে যাওয়া বেশ কিছু চিত্র সাংবাদিক। কারও কারও ক্যামেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: অসাধু বাবাদের তালিকা বানালো সাধুদের পরিষদ
গত পরশু রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয়েছিল দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র প্রদ্যুম্নের দেহ। তাকে খুনের অভিযোগে ওই দিন বিকেলেই স্কুলের একটি বাসের খালাসিকে গ্রেফতার করে গুরুগ্রাম পুলিশ। কিন্তু কমেনি অভিভাবকদের ক্ষোভ। চাপের মুখে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপ্যালকে সাসপেন্ড করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবিলম্বে বাতিল করা হোক স্কুলের অনুমোদন। হরিয়ানা পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে দোষীর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু নিহত শিশুটির বাবা-মা এখনও চাইছেন, সিবিআই তদন্ত। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রামবিলাস শর্মা আজ বলেন, ‘‘যদি শিশুটির বাবা-মা তদন্ত শেষের পরেও সন্তুষ্ট না-হন, তা হলে যে কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে আমাদের সরকার রাজি।’’ তবে তাঁর বিশ্বাস, হরিয়ানা পুলিশের দেওয়া তথ্য প্রমাণে ভরসা রাখবেন নিহত প্রদ্যুম্নের বাবা-মা। রামবিলাস আরও জানিয়েছেন, স্কুলের অনুমোদন বাতিলের বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘হাজারেরও বেশি পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ জড়িয়ে। উঁচু ক্লাসের অনেক অভিভাবকই চান না, স্কুলের অনুমোদন বাতিল হয়ে যাক। তাতে তাঁরা আতান্তরে পড়বেন।’’ স্কুলের মালিক অ্যালবার্ট পিন্টোর বিরুদ্ধে নাবালক বিচার আইন, ২০১৫-র ৭৫ নম্বর ধারায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘শৌচাগারের কিছু জানলাও ভিতর থেকে ভাঙা বলে জেনেছি। গাফিলতির দায় স্কুলকেই নিতে হবে।’’
বিষয়টি নিয়ে আজ মাঠে নেমেছে কংগ্রেসও। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা সাংবাদিক নিগ্রহের প্রবল সমালোচনা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সাংবাদিকদের গায়ে হাত উঠছে মানে রাজ্য সরকার কিছু লুকোনোর চেষ্টা করছে।’’