বৃষ্টির দিনে রুজির টানে। শনিবার দিল্লিতে। ছবি: এএফপি।
দু’দিন পরে অবশেষে গুড়গাঁও আজ যানজট মুক্ত বলে দাবি করছে প্রশাসন। কিন্তু প্রবল বৃষ্টি ও গুড়গাঁওয়ের দু’দিনের যানজটের জেরে বেহাল হয়েছে দিল্লি।
আজ দিনভর দফায় দফায় বৃষ্টির ফলে গুড়গাঁওয়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমে আছে। কিন্তু বৃহস্পতি ও শুক্রবারের যানজটের ছবি দেখা যায়নি বলে দাবি করেছেন গুড়গাঁওয়ের পুলিশ কমিশনার নভদীপ সিংহ ভ্রিক। তবে পুলিশের একটি অংশের বক্তব্য, শনিবারে অধিকাংশ তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা বন্ধ থাকে। স্কুলগুলিও বন্ধ ছিল। সোমবার ফের স্কুল ও অফিস খুলবে। বৃষ্টি তখনও চললে যানজটের সেই চেনা ছবি ফিরে আসার আশঙ্কা রয়েছে।
সমস্যা মোকাবিলায় গুড়গাঁওয়ের ১৪টি জটপ্রবণ এলাকাকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। যানজট রুখতে ওই এলাকাগুলিতে আজ থেকেই ২৪ ঘণ্টা পুলিশি পাহারা শুরু করে দেওয়া হয়েছে। গুড়গাঁওয়ের সমস্যা কিছুটা মিটলেও এ দিন বৃষ্টির ফলে দিল্লির বিস্তীর্ণ অংশে জল দাঁড়িয়ে যায়। মৌসম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৪৪ মিলিমিটার। গত ১০ বছরের মধ্যে এক দিনে সর্বাধিক বৃষ্টির রেকর্ড এটিই। ফলে রাজধানীতে গাড়ি চলেছে শামুকের গতিতে। খারাপ আবহাওয়ার জন্য ব্যাহত হয়েছে দিল্লি-চেন্নাই উড়ানও।
হরিয়ানা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার আরাবল্লী পাহাড় থেকে অতিরিক্ত জল চলে আসায় বাদশাহপুর নালার একটি অংশে ধস নামে। যার ফলে নজফগড় নালার একটি চ্যানেল বন্ধ হয়ে যায়। জল বেরোনোর রাস্তা না থাকায় গুড়গাঁও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। প্রশাসন জানিয়েছে, বাদশাহপুর নালা দিয়ে ৫০০ কিউসেক জল ছাড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আরাবল্লীতে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে প্রায় ১৭৫০ কিউসেক জল প্রবল গতিতে বইতে থাকে। তীব্র স্রোতের ফলে এক সময়ে হিরো হন্ডা চকের কাছে বাদশাহপুর নালার প্রায় ৩০০ ফুট জমি ধসে যায়। তাতেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। প্রথমে জাতীয় সড়কের দু’পাশের সার্ভিস লেন জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তারপর জল বাড়তে বাড়তে গ্রাস করে নেয় জাতীয় সড়ককেও। দাঁড়িয়ে পড়তে শুরু করে গাড়ি। যানজট মারাত্মক আকার ধারণ করে। হরিয়ানা প্রশাসন জানিয়েছে, আপাতত বাদশাহপুর নালার ভেঙে পড়া অংশের মেরামতির কাজ চলছে। যা আগামিকালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। জাতীয় সড়কও দ্রুত সারানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষজ্ঞ দল।
গুড়গাঁওয়ের সমস্যা নিয়ে গত কাল তরজায় জড়িয়ে পড়েছিলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। আজ আবার খট্টরকে নিশানা করেছেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা। রাজ্যের বিজেপি সরকারকে গোটা ঘটনার জন্য দায়ী করে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের শাসনকালে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ করে ফেলেছিলাম। কিন্তু দু’বছরেও বাকি ১০ শতাংশের কাজ করতে পারেনি বিজেপি।’’ হুডার বক্তব্য, ‘‘ওই রাস্তাটি হয়ে গেলে যানবাহন ওই পথে ঘুরিয়ে দেওয়া যেত। এত হয়রানি হতো না।’’