সিঙ্গুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তৃণমূলের মিছিল। বৃহস্পতিবার আগরতলায়। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী
সংস্কৃতির জন্য পশ্চিমবঙ্গকে অনুসরণ করলেও, অর্থনৈতিক দূরদৃষ্টির জন্য গুজরাতের পথে এগোতে চান অসমের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। আনন্দবাজার সংস্থা আয়োজিত এনআইসিটি-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘ন্যানোকে হঠিয়ে পশ্চিমবঙ্গ কী হারিয়েছে আর তাকে স্বাগত জানিয়েছে গুজরাত কী পেয়েছে, তা সকলেই দেখছে।’’
১২ বছর ধরে গুয়াহাটিতে আয়োজিত হচ্ছে এনআইসিটি। এ দিনের অনুষ্ঠানের সঙ্গে মিলে গিয়েছিল সর্বানন্দ সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হওয়ার ঘটনাও। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ বলেন, “সমৃদ্ধ অসমকে বিকাশের পথে নিতে প্রয়োজন ডিজিট্যাল সাক্ষরতা। রাজ্যের যা সম্পদ আছে তার উপরে ভিত্তি করে
তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে অসমকে দেশের পয়লা সারিতে নিতে চাই আমরা। সব বাড়িতে নেট সংযোগ দিতে চাই।” তিনি সমাবেশে হাজির আইটি কর্তাদের আবেদন জানিয়ে বলেন, “উত্তর-পূর্বের সম্পদ-সম্ভাবনাকে তুলে ধরুন। সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্র হাত মিলিয়ে চললে তবেই তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে রাজ্য এগোবে।”
তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী কেশব মহন্তর মতে, সরকার রাজ্যে ২৫ লক্ষ মানুষকে তথ্যপ্রযুক্তিতে শিক্ষিত করে তুলতে চায়। রাজ্যের সব পরিবারে এক জনকে আইটি ক্ষেত্রে শিক্ষিত করা হবে। ৪৬টি সরকারি পরিষেবা অনলাইনে মিলছে। সব গ্রামে ব্রডব্যান্ড নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা চলছে।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থমন্ত্রী হিমন্ত জানানস অসম সরকারের নতুন নীতিতে মুখ্যমন্ত্রী গ্রামোন্নয়ন যোজনায় প্রতিটি গ্রামের উন্নয়নে ১ কোটি ২০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। ২৫ হাজার গ্রামের জন্য লাগবে ৩০ হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালের মধ্যে গ্রামীণ রোজগার দ্বিগুণ হতে হবে। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই এই বিনিয়োগ। কৃষকের রোজগার ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো সরকারের লক্ষ্য।
সর্বা সরকারের পরিকল্পনা, ‘ই-গ্রাম মিশন’-এ গ্রামের ক্লাবে ক্লাবে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে। সেগুলি গ্রামে আইটি হাবের মতো কাজ করবে। যার মাধ্যমে ডিজিট্যাল লাইব্রেরি, অন্য অনলাইন সরকারি পরিষেবার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। গ্রামবাসীদের সব কাজের জন্য শহরে আসতে হবে না। এই প্রকল্পে ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
পরে অন্য প্রসঙ্গে হিমন্তবিশ্ব দাবি করেন, নতুন সরকারের ১০০ দিনের শাসনকালে রাজ্যে কোথাও কোনও দুর্নীতির অভিযোগ মেলেনি। তিনটি কলেজ, চারটি মেডিক্যাল কলেজ, ২১টি পলিটেকনিক কলেজ তৈরির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার মানোন্নয়নে বিএড ডিগ্রিধারী ১১ হাজার ২৭৮ জনকে নিয়োগ করা হবে। তিনি বলেন, “সব ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গকে অনুসরণ করা আমাদের অভ্যাস। বাংলা ন্যানোকে ফিরিয়ে দিল। গুজরাত স্বাগত জানাল। শেষ পর্যন্ত লাভ হল গুজরাতেরই। কিন্তু তারপরেও এখানে অনেকে বলছেন, বাংলা টাটাকে টক্কর দিল, অসম কেন পারবে না? আমাদের উচিত অর্থনীতিতে নয়, সংস্কৃতিতে বাংলাকে স্বাগত জানান। যে ক্ষেত্রে যে রাজ্য সেরা তাকে তাতেই অনুসরণ
করা ভাল।”