গুজরাত হাই কোর্টের রায়, এক জন শিক্ষক তাঁর থেকে অনেক ছোট ছাত্রীকে বিয়ে করতে বাধ্য করে নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছেন। —প্রতীকী চিত্র।
ছাত্রী তখন ২৩, অধ্যাপকের বয়স ৪৫ বছর। পরীক্ষায় ভাল ফল করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাত্রীকে তিনি বিয়ে করতে বাধ্য করেন। এই অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় পরিবার আদালতের রায় বহাল রাখল গুজরাত হাই কোর্ট। বিচারপতি এনভি অঞ্জরিয়া এবং বিচারপতি সন্দীপ এন ভাটের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, বয়সে অনেক ছোট ছাত্রীকে বিয়ে করতে বাধ্য করে নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছেন ওই শিক্ষক। তাই পরিবার আদালত যে বিবাহবিচ্ছেদের রায় দিয়েছে, সেটাই বহাল থাকবে।
শিক্ষক স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করে বিচ্ছেদ চেয়ে আমরেলির পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক তরুণী। তাঁর অভিযোগ, যে কলেজে তিনি পড়াশোনা করতেন, সেখানকার শিক্ষক ছিলেন তাঁর স্বামী। এক দিন শিক্ষক তাঁকে বলেন পরীক্ষায় ‘এ’ গ্রেড পেলে তিনি যা চাইবেন তা-ই করতে হবে। তিনি ‘এ’ গ্রেড পেয়েছিলেন। এর পরেই তাঁকে বিয়ে করতে বলেন শিক্ষক। জানান, তিনি বিপত্নীক। তাঁকে বিয়ে করলে তাঁর মা-হারা দুই সন্তান আবার মায়ের আদর পাবেন। এর পর বিয়েও হয় জোর করে। ছাত্রীর অভিযোগ, একাধিক জায়গায় তাঁর সই নিয়ে পরে বলা হয়, সেগুলি আসলে বিয়ের শংসাপত্র। তাঁকে ওই শংসাপত্রগুলি পড়তেও দেওয়া হয়নি।
কিছু দিন পর তরুণী এ-ও জানতে পারেন যে তাঁকে ঠকিয়েছেন শিক্ষক। কারণ, তাঁর প্রথম স্ত্রী জীবিত আছেন। অন্য দিকে, শাশুড়ি তাঁকে মানসিক নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ। আদালতে ওই তরুণী জানান, আসবাবপত্র কেনার জন্য তাঁর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন শাশুড়ি। শুধু তাই নয়, স্বামী এবং শাশুড়ি তাঁকে তিন বার গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন। সমস্ত তথ্যপ্রমাণের পর বিবাহবিচ্ছেদের অনুমোদন দেয় পরিবার আদালত। কিন্তু স্বামী এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন হাই কোর্টে। তাঁর দাবি, তিনি স্ত্রীর পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন। এবং তাঁরা ভালবাসে বিয়ে করেন। জোর-জবরদস্তি করে নয়।
সমস্ত পক্ষের সওয়াল শোনার পর গুজরাত হাই কোর্টের রায়, এক জন শিক্ষক তাঁর থেকে অনেক ছোট ছাত্রীকে বিয়ে করতে বাধ্য করে নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছেন। তাই স্ত্রী বিচ্ছেদ চাইতেই পারেন।