প্রতীকী চিত্র।
খুন-ধর্ষণ, অপহরণ নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই শিরোনামে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ। তার মধ্যেই জানা গেল, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের খাসতালুক গুজরাতও খুন-ধর্ষণ-অপহরণের নিরিখে মোটেই পিছিয়ে নেই। বিজেপি শাসিত এই রাজ্যটিতে গত দু’বছরে দৈনিক গড়ে ২টি খুন এবং ৪টি করে ধর্ষণ হয়েছে! অপহরণের ঘটনাও কম নয়। দৈনিক গড়ে ৬টি! খোদ রাজ্য সরকার বিধানসভায় যে তথ্য পেশ করেছে, তা থেকেই এই হিসেব স্পষ্ট হয়েছে।
বুধবারই রাজ্য বিধানসভায় অপরাধের খতিয়ান পেশ হয়। তাতে গত বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে অপরাধের হিসেব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গত দু’বছরে রাজ্যে ১৯৪৪টি খুন, ৩০৯৫টি ধর্ষণ, ৪৮২৯টি অপহরণ, এবং ১৮৫৩টি খুনের চেষ্টার ঘটনা লিপিবদ্ধ হয়েছে। এই সময়কালে রাজ্যে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১৪ হাজার। ধর্ষণে শীর্ষে রাজধানী আমদাবাদ। সেখানে দু’বছরে ৬২০টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। লুটপাট এবং চুরিতেও শীর্ষে রাজ্যের রাজধানী আমদাবাদই। খুনের ঘটনায় আবার এগিয়ে বস্ত্রনগরী বলে খ্যাত সুরাত। সেখানে দু’বছরে ২৮০টি খুনের ঘটনা সামনে এসেছে। অপহরণেও (দু’বছরে ৭০১টি) এগিয়ে সুরাত।
রাজ্যে অপরাধের খতিয়ান জানতে চেয়ে বিরোধী বেশ কয়েক জন কংগ্রেস বিধায়কদের প্রশ্নের জবাবে সরকার এই খতিয়ান পেশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, এই সমস্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ৪০৪৩ জন অপরাধী এখনও পুলিশের নাগালের বাইরে। এই সময়কালের মধ্যে ৬৮ কোটি টাকারও বেশি নিষিদ্ধ মাদক উদ্ধার হয়েছে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে। উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ ভারতে তৈরি বিদেশি মদও।
কথায় কথায় দেশের নানা প্রান্তে গিয়ে ‘গুজরাত’ মডেলের কথা প্রচার করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপির শীর্ষ নেতারাও ‘গুজরাত মডেল’ নিয়ে হামেশাই প্রচার করেন। এ হেন গুজরাতে অপরাধের এমন তথ্য সামনে আসার পরে বেশ অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁরা বিষয়গুলির সঙ্গে আর্থ-সামাজিক-সহ নানা প্রসঙ্গ টেনে আনলেও বিরোধীদের বক্তব্য, খুন-ধর্ষণ-অপহরণে যোগী আদিত্যানাথের উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে মোদীর মডেল রাজ্য গুজরাত! বিজেপি-শাসিত দুই রাজ্যের অপরাধের ক্রমবর্ধমান হিসেব তুলে ধরে সরব হচ্ছেন বিরোধী নেতারা।