ফাইল চিত্র।
কে কত বেশি জনদরদি? পাঁচ রাজ্যেসদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের পর এখন সেই লড়াইয়ে মেতেছে রাজনৈতিক দলগুলি।
মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেসের দেখানো পথেই হেঁটে ভোটারদের মন জয় করতে এবার গুজরাতে আসরে নামল বিজেপি। গ্রামীণ এলাকায় ৬৫০ কোটি টাকার বিদ্যুত বিল মকুব করার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপিশাসিত গুজরাত সরকার। মঙ্গলবারই এই ঘোষণা করেন গুজরাতের বিদ্যুৎমন্ত্রী সৌরভ পটেল।
মধ্যপ্রদেশে আনুমানিক ৫০ হাজার কোটি টাকার কৃষিঋণ মকুবের কথা ঘোষণা করে নিশ্চিত ভাবেই প্রথম এই পথে হাঁটে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ কমল নাথ। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ফুঁসতে থাকা দেশের কৃষক সমাজকে পাশে পেতেই এই সিদ্ধান্ত, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এর পর একই সিদ্ধান্ত নেন ছত্তীসগঢ়ের সদ্য নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল। ছত্তীসগঢ়ের ক্ষেত্রে এই ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা। মঙ্গলবার খোদ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী জানিয়ে দেন, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজস্থানেও খুব তাড়াতাড়ি কৃষিঋণ মকুবের ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন: ‘সব কৃষকের ঋণ মকুব না করা পর্যন্ত মোদীকে ঘুমোতে দেব না’, ফের তোপ রাহুলের
এক দিকে কোণঠাসা কৃষক সমাজের বাড়তে থাকা ক্ষোভ, অন্য দিকে হঠাৎ করে উঠে আসা কংগ্রেসের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ, এই দু’মুখো আক্রমণের মুখে পড়ে কল্পতরু হওয়ার রাস্তায় হাঁটল বিজেপিও। এ জন্য তারা বেছে নিল নিজেদের ‘ব্র্যান্ড’ রাজ্য গুজরাতকেই। তবে সরাসরি কৃষিঋণ মকুব নয়, একটু ঘুরপথে কৃষক সমাজের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল গুজরাত বিজেপি। মঙ্গলবার গুজরাতের বিদ্যুৎমন্ত্রী সৌরভ পটেল জানালেন, ‘‘গুজরাতের গ্রামীণ এলাকায় ৬ লক্ষ ২২ হাজার গ্রাহকের ইলেকট্রিক বিল মকুব করা হবে। এই বিদ্যুতের মূল্য প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা।’’
একই সঙ্গে সৌরভ জানিয়েছেন, ‘‘বিদ্যুৎ চুরি, বিল না দেওয়ার জন্য এই গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। এই মকুব করার সিদ্ধান্তের ফলে এই গ্রাহকের ফের বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে পাবেন। এর মধ্যে গ্রামীণ এবং কৃষির সঙ্গে যুক্ত মানুষের সংখ্যাই বেশি। যদিও বেশ কিছু বাণিজ্যিক সংযোগও এর মধ্যে আছে।’’
আরও পড়ুন: ৯৯ শতাংশ পণ্যকেই আনা হবে ১৮ শতাংশ জিএসটি-র আওতায়, ইঙ্গিত মোদীর
গুজরাতের সিদ্ধান্ত থেকে পরিষ্কার আপাতত বেশ কিছুদিন জনমোহিনী রাস্তাতেই হাঁটবে রাজনৈতিক দলগুলি। সরাসরি কৃষকদের কথা না বললেও জিএসটি নিয়েও মঙ্গলবার একই রাস্তায় হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছেনপ্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, গত কয়েক বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলতে থাকা কৃষক আন্দোলন এবং সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়ার ঘটনা চাক্ষুষ করার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে রাজনৈতিক দলগুলি।
কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।