নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
ঘরে-বাইরে ধেয়ে আসছে আক্রমণ। তবু গুজরাতে প্রচারের শেষ দিনেও পাকিস্তানকেই প্রধান বিতর্কের বিষয় হিসেবে জিইয়ে রাখল বিজেপি।
কংগ্রেসের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পাকিস্তান গুজরাত ভোটে নাক গলাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নরেন্দ্র মোদী। কঠোর ভাষায় যার নিন্দা করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। মোদীকে নিশানা করে এনডিএ-শরিক শিবসেনাও। আজ আরও সুর চড়িয়ে দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’-য় উদ্ধব ঠাকরের দল প্রশ্ন তুলেছে, পাকিস্তান যদি সত্যিই গুজরাতের ভোটে হস্তক্ষেপ করে, তবে প্রধানমন্ত্রী কেন শুধু অভিযোগ করছেন? কেন পদক্ষেপ করছেন না? বিহার ভোটের সময়েও অমিত শাহ বলেছিলেন, বিজেপি হারলে পাকিস্তানে উৎসব হয়। পায়ের তলায় মাটি সরছে দেখেই বিজেপি ফের পাকিস্তান আর দাউদের কথা তুলছে। এনসিপি-প্রধান শরদ পওয়ারও বলেছেন, ‘‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, প্রাক্তন সেনাকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন! প্রধানমন্ত্রী আপনাকে ধিক্কার।’’ আর রাহুল গাঁধী আজ বলেন, ‘‘মনমোহনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ মেনে নেওয়া যায় না।’’ কংগ্রেসের অভিযোগ, নোট বাতিল, জিএসটি, আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার মতো প্রশ্ন ভুলিয়ে দিতেই মোদী এখন পাক-তাস খেলছেন।
আরও পড়ুন: থমকে উন্নয়নের রথ, অবজ্ঞার জবাব দিতে চায় অমদাবাদের মুসলিম মহল্লা
প্রাক্তন পাক বিদেশমন্ত্রী খুরশিদ মেহমুদ কাসুরির সম্মানে মণিশঙ্কর আইয়ারের বাড়িতে এক নৈশভোজে মনমোহন, প্রাক্তন সেনাপ্রধান দীপক কপূর, প্রাক্তন বিদেশসচিব সলমন হায়দর ছাড়াও ছিলেন শরৎ সাভরওয়াল, চিন্ময় ঘরেখানের মতো প্রাক্তন কূটনীতিক, সাংবাদিক রাহুল সিংহেরা। তাঁরাও জানিয়েছেন, ওই নৈশভোজে গুজরাত নিয়ে কোনও কথাই হয়নি। একই দাবি করেছেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান কপূরও।
বিজেপি তবু ভোট-প্রচারের শেষ দিনেও মোদীর দাবিকে তুঙ্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে দিনভর। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এ দিন অমদাবাদে অভিযোগ তোলেন, বাজপেয়ী সরকার পাকিস্তান সম্পর্কে কড়া অবস্থান নিয়েছিল। কিন্তু মনমোহন সিংহ এসে সুর নরম করেন। তাঁর জমানাতেই মেনে নেওয়া হয়, পাকিস্তানও সন্ত্রাসের শিকার এবং বালুচিস্তানে ভারত নাক গলায়। রবিশঙ্করের প্রশ্ন, ‘‘বর্তমান সরকারের অবস্থান হল, পাকিস্তান সন্ত্রাস বন্ধ না করলে কথা হবে না। তা হলে মনমোহন কেন পাকিস্তানের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন?’’