নিজেরাই নিজেদের বলি দিলেন গুজরাতের দম্পতি। প্রতীকী ছবি।
সামাজিক রীতি অনুসরণ করতে গিয়ে নিজেদের বলি দিলেন দম্পতি। নিজেরাই হাঁড়িকাঠ প্রস্তুত করলেন। তার পর নির্দ্বিধায় তার নীচে মাথা রেখে নিজেদের উৎসর্গ করলেন। বলির পর দম্পতির দেহের পাশে মিলল সুইসাইড নোট।
ঘটনাটি গুজরাতের রাজকোট জেলার। মৃতেরা হলেন হেমুভাই মাকোয়ানা (৩৮) এবং তাঁর স্ত্রী হংসবেন (৩৫)। শনিবার রাতে উৎসব উপলক্ষে বলির যন্ত্রে নিজেরাই নিজেদের মাথা কেটেছেন তাঁরা। রবিবার পুলিশ গিয়ে তাঁদের দেহ উদ্ধার করে।
সাব ইনস্পেক্টর ইন্দ্রজিৎসিন জাডেজা জানান, ঈশ্বরের উদ্দেশে দম্পতি নিজেদের বলি দিয়েছেন। নিজেরাই বাড়িতে তাঁরা বলির যন্ত্র প্রস্তুত করেছিলেন। তার পর তাতে মাথা রেখেছেন। এমন ভাবে গোটা প্রক্রিয়াটির পরিকল্পনা করা হয়েছিল যে, যন্ত্রের ঘায়ে মাথা কেটে সঙ্গে সঙ্গে তা গড়িয়ে যাবে সামনে রাখা যজ্ঞের বেদীতে। সেখানে যে আগুন জ্বলবে, সেই আগুনে পুড়ে যাবে মাথা দু’টি। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হয়েছে।
কী ভাবে বলির যন্ত্র বানিয়েছিলেন দম্পতি? পুলিশ জানিয়েছে, একটি দড়ির মাধ্যমে মাটি থেকে বেশ কিছুটা উচ্চতায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল লোহার ধারালো ব্লেড। তার নীচে বলির হাঁড়িকাঠ প্রস্তুত করেছিলেন দু’জন মিলে। শনিবার রাতে সেই বলির যন্ত্রের সামনে বেদীতে তাঁরা আগুন জ্বালান এবং হাঁড়িকাঠে মাথা রেখে দড়ির বাঁধন খুলে দেন। উপর থেকে সঙ্গে সঙ্গে নীচে পড়ে লোহার যন্ত্র। কেটে যায় দু’টি মাথা।
মৃতদের পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, এই দু’জন গত প্রায় এক বছর ধরে পুজো করছেন। ঈশ্বরের আরাধনায় মেতে আছেন। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। দম্পতি যে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পরিবারের সদস্যেরা কেউ জানতে পারেননি। পরের দিন সকালে তাঁদের কাছে মৃত্যুসংবাদ যায়। তাঁরাই পুলিশ ডাকেন।
সুইসাইড নোটে দম্পতি সন্তানদের দেখাশোনা করার আর্জি জানিয়ে গিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের কাছে। এই ঘটনায় পুলিশ দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। দেহ দু’টি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।