আমজনতার দরজায় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের নিয়ে গিয়ে প্রচারের কথা ভাবনা বিজেপির। ছবি সংগৃহীত।
গুজরাতের পরিস্থিতি যে যথেষ্ট প্রতিকূল তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই ক্ষমতা ধরে রাখতে আমজনতার দরজায় দরজায় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের নিয়ে গিয়ে প্রচারের কথা ভাবছেন তাঁরা। তবে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নির্ভর করছে নিরাপত্তাবাহিনী ও গোয়েন্দাদের ছাড়পত্রের উপরে। ।
গুজরাতে আগামী ১ এবং ৫ ডিসেম্বর দু’দফায় ভোটগ্রহণ। এক দিকে ভোট ময়দানে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সক্রিয়তা, অন্য দিকে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ায় জেরবার ক্ষমতাসীন বিজেপি। পদ্মশিবির সূত্রের মতে, দুই পর্বে ভোট প্রচারের শেষ দিনে মোদী এবং শাহের যে এলাকায় জনসভা থাকবে, সেই এলাকায় বাড়ি-বাড়ি ঘুরে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার, তাঁদের সমর্থনে ভোট চাইবেন ওই দুই শীর্ষনেতা। যেমনটি দলের এক জন সাধারণ কর্মী করে থাকেন, ঠিক সে ভাবেই জনসংযোগের লক্ষ্যে মোদী-শাহদের পথে নামানোর কথা ভাবছেন দলীয় নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, মোদী-শাহ আমাদের তারকা প্রচারক। স্বভাবতই তাঁরা যদি পথে নেমেন, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রচার করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর একটি ইতিবাচক প্রভাব গোটা রাজ্যেই পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণে ওই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
হিমাচলপ্রদেশের মতো গুজরাতেও দলকে মূলত চিন্তায় রেখেছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা। ইতিমধ্যেই অন্তত এক ডজনের বেশি বিজেপি নেতা টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। যার মধ্যে উল্লেখজনক হলেন রাজ্যের জনজাতি নেতা হর্ষদ বাসাভা। ইতিমধ্যেই বিজেপি থেকে ইস্তফা দিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়ার জন্য নানদোদ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তিনি। দু’বারের বিধায়ক ওই নেতা টিকিট না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ আদিবাসী সমাজের একাংশ। বিষয়টিকে অস্ত্র করেছে কংগ্রেসও। বিজেপির আশঙ্কা হর্ষদের কারণে নানদোদ ছাড়াও সংলগ্ন জনজাতি অধ্যুষিত আসনগুলিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সূত্রের মতে, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংভি হর্ষদের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে লড়াই থেকে সরে যাওয়ার আবেদন করেছিলেন। তাতে কর্ণপাত করেননি হর্ষদ।
বিদ্রোহের আঁচ সৌরাষ্ট্র এলাকাতেও। ওই এলাকার কেসোদ আসন থেকে টিকিট না পাওয়ায় দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক অরবিন্দ লাদানি। একই ভাবে বরোদা জেলার পাদ্রা আসন থেকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক দীনেশ পটেল। ওই জেলারই করজন বিধানসভা আসন থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সতীশ পটেল। ওই কেন্দ্রে গতবারের জয়ী কংগ্রেস বিধায়ক অক্ষয় পটেল যিনি পরে বিজেপিতে যোগ দেন তাঁকেই এ বারে প্রার্থী করেছে দল। দলের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ সতীশ ওই কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই দু’জনকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার আবেদন জানাতে দীনেশ ও সতীশের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন হর্ষ। সূত্রের মতে, দু’নেতাই হর্ষের সঙ্গে দেখা করবেন না বলে জানিয়ে দেন।