নতমস্তক: জুতোর মালা পরে মুমতাজউদ্দিন। রাঁচীতে। —নিজস্ব চিত্র।
পণের মোটরসাইকেল পছন্দ হয়নি পাত্রপক্ষের। বিয়ের আসরে পৌঁছে তারা দাবি করে, দ্বিগুণ দামের নতুন মডেলের মোটরসাইকেল কিনে দিতে হবে মেয়ের বাবাকে।
রুখে দাঁড়ান বছর আঠেরোর কনে। প্রতিবাদে সরব হয় গোটা গ্রাম। বেগতিক দেখে পালায় বরযাত্রীরা। ফুলের মালা খুলে পাত্রের গলায় জুতোর হার পরিয়ে দেন এলাকাবাসী। সিদ্ধান্ত নেন, এর পর গ্রামের কোনও মেয়ের বিয়ের জন্য পণ নিয়ে দরদাম করা হলে একই কাজ করা হবে।
বুধবার সকালে এমনই কাণ্ড ঘটে রাঁচীর পিথোরিয়ায়।
রাঁচীর সিকদিরির মুমতাজউদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল রুবিনা পরভিনের। রুবিনার বাবা বসিরউদ্দিন আনসারি চায়ের দোকান চালান। তিনি বলেন, ‘‘পণ হিসেবে মোটরসাইকেল চেয়েছিল ছেলে। কয়েক দিন আগে তাকে রাঁচীর একটি শো-রুমে নিয়ে যাই। ছেলেই পছন্দ করেছিল মোটরসাইকেল।’’
গোলমালের শুরু বিয়ের ঠিক আগে। বরযাত্রীরা মোটরসাইকেল দেখে রেগে যায়। বসিরউদ্দিন জানান, তখনই তাঁকে নতুন মডেল, নতুন রঙের মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার দাবি করে পাত্র। কনের বাবা বলেন, ‘‘আমি গরিব মানুষ। রাতারাতি কী করে দ্বিগুণ দামের মোটরসাইকেল কিনে দেব?’’ হইচই শুনতে পান রুবিনাও। বিয়েতে বেঁকে বসেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৩টি মন্ত্রে দিল্লি জয় বিজেপির
তাঁর পাশে দাঁড়ায় গোটা গ্রাম। গ্রামবাসীরা পাত্রপক্ষকে তখনই সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। বেগতিক দেখে সমঝোতার চেষ্টা করে বরযাত্রীরা। কিন্তু রুবিনা ছিলেন অনড়। ওই সময়ই কয়েক জন পড়শি জুতোর মালা তৈরি করে মুমতাজের গলায় পরিয়ে দেন। হুঁশিয়ারির সুরে তাঁরা জানিয়ে দেন, বিয়েবাড়ি ছেড়ে না গেলে মাথার চুল কেটে তাকে গোটা গ্রাম ঘোরানো হবে। পাত্রের গলায় তখন উল্টো সুর। সে বলে, ‘‘আমি এখনই নতুন মোটরসাইকেল কিনে দিতে বলিনি। বলেছিলাম পরে পাল্টে দিলে ভাল হয়। আপাতত কয়েক বছর এটাই চালিয়ে নিতাম।’’
এর পর গ্রামবাসীদের সিদ্ধান্ত, ভবিষ্যতে কোনও পাত্রপক্ষ পণ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাদেরও জুতোর মালা পরানো হবে। সব কিছুর পর রুবিনা বলেন, ‘‘যে ছেলে বিয়ের দিন এমন করতে পারে, তাঁর সঙ্গে সারা জীবন কাটানোর ইচ্ছা আমার নেই।’’