কুসংস্কারের বশেই শ্যারনকে খুন করেছেন গ্রীষ্মা? ছবি: সংগৃহীত।
কুসংস্কারের বশেই প্রেমিককে বিষ খাইয়ে খুন করেছেন গ্রীষ্মা। তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট খতিয়ে দেখার পর এই সম্ভাবনা আরও জোরালো হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের।শ্যারনের কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য নানা রকম ভাবে তাঁকে ভয়ও দেখিয়েছিলেন গ্রীষ্মা। এক জ্যোতিষী নাকি তাঁকে বলেছিলেন, বিয়ের পরই প্রথম স্বামীর মৃত্যু হবে! গ্রীষ্মাকে জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে যে, এ কথা বলে শ্যারনকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। যাতে গ্রীষ্মার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন শ্যারন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।
গ্রীষ্মার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, এক জ্যোতিষী তাঁকে বলেছিলেন প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বার বিয়ে করলে সুখে-শান্তিতে সংসার করতে পারবেন গ্রীষ্মা। আর সেই কুসংস্কারবশেই শ্যারনকে খুন করেছেন তিনি। শ্যারনের বাবা-মাও একই অভিযোগ তুলেছেন।
শ্যারনের এক আত্মীয়ের দাবি, জ্যোতিষীর কথা বলে গ্রীষ্মা শ্যারনকে ভয় দেখাতে চাইলেও, তিনি সেই ভবিষ্যদ্বাণীকে ভুল প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন। আর তাই গ্রীষ্মাকে একটি গির্জায় নিয়ে গিয়ে গোপনে বিয়েও করেছিলেন শ্যারন। কিন্তু এই ঘটনায় মনে মনে মোটেই খুশি ছিলেন না গ্রীষ্মা। ফলে শ্যারন যাতে তাঁর মনের ইচ্ছাটা ধরতে না পারেন, তাই তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিনয় করে গিয়েছিলেন। আর তলে তলে তাঁকে খুন করার ছকও কষে নিয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, শ্যারন এবং গ্রীষ্মা স্বামী-স্ত্রীর মতোই থাকতেন। পুলিশের কাছে গ্রীষ্মা দাবি করেছেন, শ্যারন প্রায়ই নাকি তাঁকে হুমকি দিতেন সম্পর্ক ভেঙে দিলে তাঁদের গোপন ছবি ফাঁস করে দেবেন। আর এই ঘটনা ভিতরে ভিতরে বিচলিত করে তুলেছিল গ্রীষ্মাকে। তাঁর ভয় ছিল যদি তাঁর হবু স্বামীর কাছে এই ছবি পৌঁছয়, তা হলে বিপদ হতে পারে।
পুলিশকে গ্রীষ্মা আরও জানিয়েছেন যে, শ্যারনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এবং বিয়ের কথা একমাত্র তাঁর মা জানতেন। শ্যারনের বিশ্বাস অর্জন করতে তাই সিঁদুরও পরতেন গ্রীষ্মা। তাঁরা এক সঙ্গে বহু জায়গায় ঘুরতেও গিয়েছিলেন। এত কিছুর মধ্যেও গ্রীষ্মা চাইছিলেন শ্যারনের থেকে নিজেকে মুক্ত করতে। শেষমেশ তাঁকে খুনের সিদ্ধান্ত নেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন শ্যারনের সঙ্গে গ্রীষ্মার কথা কাটাকাটি হয়। তাঁকে শান্ত করানোর জন্য সরবত খাওয়ান। সেই সরবতের মধ্যে কীটনাশক মিশিয়ে দিয়েছিলেন। ১৪ অক্টোবর বিষ মেশানো সরবত খাওয়ানো হয়েছিল শ্যারনকে। গত ২৫ অক্টোবর মৃত্যু হয় তাঁর। কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের এই ঘটনার পরতে পরতে রহস্য। আর সেই রহস্যের জট খুলতে ব্যস্ত পুলিশ।