প্রতীকী চিত্র।
দিল্লি-সহ দেশের রাজধানী এলাকায় (ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন বা এনসিআর) নভেম্বর মাসে পুরোপুরি বাজির বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধ করার নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত ( ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল)। সোমবার ট্রাইবুনালের চেয়ারপার্সন বিচারপতি আদর্শকুমার গোয়েলের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি দেশের যে সব শহরে নভেম্বর মাসে বায়ুদূষণ সূচক ২০০ বা তার বেশি থাকে, সেখানেও বাজি বিক্রি ও পোড়ানো পুরোপুরি বন্ধ করতে বলেছে।
দূষিত বায়ুর শহরের ওই তালিকায় কলকাতা, হাওড়া, ব্যারাকপুর, আসানসোল, হলদিয়া, রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর রয়েছে। ট্রাইবুনালের কাছে এমন অন্তত ১২৩টি শহরের তালিকা জমা পড়েছিল। তবে পরিবেশ আদালত জানিয়েছে, এই নির্দেশের পরেও কোনও রাজ্য নিষেধাজ্ঞার বহর ও পরিমাণ বাড়াতে পারে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র ইতিমধ্যেই বাজি নিষিদ্ধ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। রায়ের শুরুতেই সে কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নাগরিকদের নির্মল বায়ুসেবনের অধিকার দেওয়া যে পরিবেশ আদালতের কর্তব্য সে কথাও স্মরণ করিয়েছেন বিচারপতি গোয়েল।
পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যে সব এলাকায় নভেম্বরে বায়ুদূষণ সূচক গড়ে ২০০-এর কম থাকে, সেখানে রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানো যেতে পারে। তবে এই মামলায় মূল যে বিষয় নিয়ে আদালতে আলোচনা হয়েছে, তা হল বাজির ধোঁয়ার সঙ্গে কোভিডের প্রকোপ বৃদ্ধির সম্পর্ক। বাজি নির্মাতা ও বিক্রেতাদের আইনজীবী মহেশ জেঠমলানি এই অভিযোগ খারিজ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আদালতবান্ধব হিসেবে নিযুক্ত আইনজীবী রাজ পঞ্জওয়ানির পেশ করা তথ্যে বাজি নির্মাতা পক্ষের যুক্তি টেকেনি। পাশাপাশি বাজি নির্মাতা ও ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির প্রসঙ্গ উঠেছিল। কিন্তু ট্রাইবুনাল বলেছে, মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের থেকে ব্যবসায়িক লাভ বড় হতে পারে না।
ওড়িশা, সিকিম, রাজস্থান ও কর্নাটক সরকার স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বাজি নিষিদ্ধ করেছে। পরিবেশ আদালতের রায় অনুযায়ী, ওই সব রাজ্যে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। পরিবেশ আদালতের রায়ের পরেই হরিয়ানার বিজেপিচালিত সরকার জানিয়েছে, রাজধানীর অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলি ছাড়া বাকি সব জেলায় বাজি পোড়ানোর জন্য দু’ঘণ্টা বরাদ্দ হবে। বাজি বিক্রির নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে। গেরুয়া শিবির ঘনিষ্ঠ অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আদালতের রায়ের সমালোচনা করে লিখেছেন, “দীপাবলিতে বাজি বন্ধ করা হল, বড়দিনে কেন হল না?” যদিও রায়ে উল্লেখ আছে, যে এই রায় ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত থাকবে। ডিসেম্বরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ফের নির্দেশ দেওয়া হবে।