এস-৪০০। ছবি: সংগৃহীত।
রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনায় ভারতের উপর নিষেধাজ্ঞা বলবতে উদ্যোগী হয়েছিল পূর্বতন ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। এ বার আমেরিকার নয়া প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে সে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানালেন সেনেটর জন কর্নান।
জন এবং আর এক সেনেটর মার্ক ওয়ার্নার ভারতের বিরুদ্ধে ‘কাউন্টারিং আমেরিকাজ অ্যাডভারসারিজ থ্রু স্যাঙ্কশনস্ অ্যাক্ট’ (কাটসা) আইন অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির প্রক্রিয়া প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন। এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে চিঠিও লিখেছেন তাঁরা।
২০১৭ সালে চালু করা ‘কাটসা’ আইন অনুযায়ী রাশিয়া, ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনলে যে কোনও দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে ওয়াশিংটন। কিন্তু দুই সেনেটরের মতে, ‘বর্তমানে আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা সহযোগী ভারত। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে মস্কো থেকে সমরাস্ত্র কিনছে নয়াদিল্লি।’ পাশাপাশি চিঠিতে তাঁরা দাবি করেছেন, কাটসা আইন রূপায়ণের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়ার অন্যায় আচরণগুলির বিরোধিতা করা। আমেরিকার কোনও সহযোগী রাষ্ট্রকে বিব্রত করা নয়।
ভারত আগের তুলনায় রাশিয়া থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি কমিয়েছে বলেও জানিয়েছেন ‘ইন্ডিয়া ককাস’-এর ওই দুই সেনেটর। তাঁরা লিখেছেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনার বিকল্প পথগুলি বেছে নেওয়ার বিষয়ে ভারতে উৎসাহিত করা।’
চলতি বছরের গোড়ায় আমেরিকার কংগ্রেসের গবেষণা শাখা ‘কংগ্রেসিনাল রিসার্চ সার্ভিস’ (সিআরএস)-এর রিপোর্টেও এ বার একই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ কিনলে ‘বড় ক্ষতির মুখে’ পড়বে ভারত। তার আগে ট্রাম্প সরকারের বিদেশসচিব মাইক পম্পিও একই হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আপত্তিতে কর্ণপাত না করেই রাশিয়া থেকে দূরপাল্লার ‘ভূমি থেকে আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার প্রক্রিয়া চালিয়ে গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে প্রথম রুশ বাহিনীতে এস-৪০০ অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০১৪-য় এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ করে নয়াদিল্লি। ২০১৮ সালের অক্টোবরে রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী এস -৪০০ প্রযুক্তি কেনার জন্য প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার চুক্তি সই হয়। শুধু ক্ষেপণাস্ত্র নয়, এই প্রযুক্তির সাহায্যে শত্রুর বিমান এবং ড্রোনও ধ্বংস করা যাবে। ২০১৯ সালের গোড়ায় ট্রাম্প সরকার জানিয়েছিল, রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ কেনার চুক্তি বাতিল করলে ভারত টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) এবং পেট্রিয়ট-৩ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা পাবে। কিন্তু নয়াদিল্লি সেই প্রস্তাব মানেনি।