শ্রদ্ধাজ্ঞাপন প্রধানমন্ত্রীর। চেন্নাইয়ের রামকৃষ্ণ মঠে, শনিবার। নিজস্ব চিত্র
তামিলনাড়ুর মাইলাপোরায় রামকৃষ্ণ মঠের ১২৫তম বার্ষিকীতে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস, সারদা দেবী ও স্বামী বিবেকানন্দকে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী। দাবি করলেন, তাঁর সরকারের সব প্রকল্প বিবেকানন্দের নীতি মেনেই চলে।
মাইলাপোরায় রামকৃষ্ণ মঠের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘রামকৃষ্ণ মঠকে আমি গভীর ভাবে শ্রদ্ধা করি। এই প্রতিষ্ঠান আমার জীবনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। চেন্নাইয়ে মঠের ১২৫তম বার্ষিকীতে যোগ দিয়ে আমি তামিল ভাষাভাষী মানুষের কাছে এসেছি। তামিল ভাষা, সংস্কৃতি ও চেন্নাইয়ে পাওয়া অনুভূতিকে ভালবাসি। পশ্চিমি দুনিয়ায় বিখ্যাত সফরের পরে ফিরে এসে বিবেকানন্দ যে ভবনে ছিলেন সেই বিবেকানন্দ হাউসে আমি আজ ধ্যান করলাম। তাতে অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।’’
মোদীর কথায়, ‘‘রামকৃষ্ণ মঠ তামিলনাড়ুতে শিক্ষা, গ্রন্থাগার ও পুস্তক ব্যাঙ্ক তৈরি, কুষ্ঠ নিয়ে সচেতনতা তৈরি ও কুষ্ঠরোগীদের পুনর্বাসন, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও নার্সিং এবং গ্রামীণ উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রে কাজ করছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘কিন্তু তারও আগে তামিলনাড়ু বিবেকানন্দের জীবনে প্রভাব ফেলেছিল। এখানেই তাঁর জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেয়েছিলেন বিবেকানন্দ। তাঁর রূপান্তরের প্রভাব পড়েছিল শিকাগোয়। পশ্চিম থেকে ফেরার পরে প্রথমে তামিলনাড়ুতেই পা রেখেছিলেন স্বামীজি। তাঁকে সম্মানের সঙ্গে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন রামনাড়ের রাজা। স্বামীজি চেন্নাইয়ে আসার পরে তাঁকে বিশেষ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল। নোবেলজয়ী ফরাসি লেখক রোম্যাঁ রোলাঁ বর্ণনা দিয়েছেন সেই উৎসবের। ১৭টি বিজয়তোরণ তৈরি হয়েছিল। সে ছিল এক উৎসব।’’ মোদীর কথায়, ‘‘স্বামীজি ছিলেন বঙ্গের মানুষ। কিন্তু তামিলনাড়ুতে তাঁকে নায়কের সম্মান জানানো হয়েছিল। ভারতের স্বাধীনতার আগেই গোটা দেশের ঐক্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা ছিল দেশবাসীর। এটাই এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের ধারণা। সেই ধারণা মেনেই কাজ করে রামকৃষ্ণ মঠ।’’
মোদীর দাবি, ‘‘আমাদের প্রশাসনের ধারণাও স্বামী বিবেকানন্দের নীতি মেনেই চলে। বিবেকানন্দ মনে করতেন, যখনই অল্প কয়েক জন সুবিধে পাওয়ার বদলে সাম্য আসে তখনই প্রগতি হয়। আমাদের সরকারের প্রকল্পগুলিতে সেই নীতিরই প্রতিফলন দেখতে পাবেন। উন্নয়নের দরজা সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের অন্যতম সফল প্রকল্প মুদ্রা যোজনার আজ অষ্টম বার্ষিকী। তামিলনাড়ুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এই প্রকল্পে রাজ্যকে শীর্ষ স্থানে নিয়ে গিয়েছেন।’’ মোদীর দাবি, খেলাধুলো থেকে নারী প্রগতি, সর্বত্রই বিবেকানন্দের নীতিরই প্রতিফলন ঘটছে সরকারি নীতিতে।
আজ চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১,২৬০ কোটি টাকা মূল্যের নয়া টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এতে যাত্রী পরিষেবার সুবিধে বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।