এখনও উপত্যকায় বন্দি ওমর আবদুল্লা। —ফাইল চিত্র।
উপত্যকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ যখন তুঙ্গে, একযোগে যখন ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদীরা, সেই পরিস্থিতিতেও সাধারণ মানুষকে বাড়ির বাইরে বার করে আনতে পেরেছিলেন তিনি। তাঁদের ভোট দেওয়াতে পেরেছিলেন। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাকে বন্দি করার পিছনে, তাঁর এই জনপ্রিয়তাকেই দায়ী করল কেন্দ্রীয় সরকার। ওমর আবদুল্লা কতটা প্রভাবশালী তা তুলে ধরতে আগের সেই ঘটনাকেই উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করা হল।
কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করার সিদ্ধান্ত নিলে, গত ৫ অগস্ট ওমর আবদুল্লাকে আটক করা হয়। গত ছ’মাস ধরে উপত্যকায় বন্দি হয়ে রয়েছেন তিনি। সম্প্রতি জন নিরাপত্তা আইনেও অভিযুক্ত করা হয়েছে তাঁকে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের একটি নথি সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে। তাতে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) সহ-সভাপতি ওমরের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘‘উনি উগ্রবাদী চিন্তাধারাকে সমর্থন করেন এবং যা তিনি কাজেও করে দেখিয়েছেন।’’ যদিও এর সপক্ষে কোনও প্রমাণের উল্লেখ নেই ওই নথিতে।
যে কোনও বিষয়ে মানুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতাও ওমরের রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই নথিতে। বলা হয়েছে, ‘‘উপত্যকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ যখন তুঙ্গে, ভোট বয়কটের ডাক উঠেছিল সর্বত্র, সেইসময়ও সাধারণ মানুষকে বাড়ির বাইরে বার করে ভোট দেওয়াতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। এ থেকেই আন্দাজ করা যায়, মানুষকে প্রভাবিত করার কতটা ক্ষমতা রয়েছে ওঁর।’’
আরও পড়ুন: শকিং! কমিশন করছে টা কী? ভোটের হার না জানানোয় তোপ কেজরীবালের
আরও পড়ুন: করোনা আমদানি হতে পারে ২০ দেশে, ১৭ নম্বরে ভারত: সমীক্ষা
ওমর উপত্যকার বিশেষ মর্যাদা বিলোপের বিরোধিতা করেছিলেন এবং দেশের অখণ্ডতা রক্ষার বিরুদ্ধে টুইটারে মানুষকে উস্কানি দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে ওই নথিতে।অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে ওমরের টুইটার হ্যান্ডল থেকে কোনও উস্কানিমূলক পোস্ট দেখাতে পারেনি কেন্দ্র। ৫ অগস্ট গ্রেফতার হওয়ার আগে ওমরের টুইটার হ্যান্ডল থেকে শেষ যে টুইটটি পোস্ট হয়েছিল, তাতে শান্তি এবং সংযমের কথাই বলা ছিল।
রাজনীতির আড়ালে ওমর সরকার বিরোধী কাজকর্মে লিপ্ত ছিলেন বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, দেশবিরোধী কাজকর্মে লিপ্ত ছিলেন উনি। সরল মনে মানুষ ওঁকে সমর্থন করলেও, এই ধরনের কাজকর্ম চালিয়ে গিয়েছেন উনি। কিন্তু ৩৭০ এবং ৩৫-এ ধারা বিলোপের পর মানুষের সমর্থন জোগাড় করতেই স্বমূর্তিতে ধরা দেন উনি। নোংরা রাজনীতিতে ভর করে সরকারি নীতির বিরুদ্ধে মানুষকে উস্কানি দিতে শুরু করেন।’’দীর্ঘ ছ’মাস ধরে বন্দিদশায় দিন কাটছে ওমরের। বন্দি রয়েছেন তাঁর বাবা ফারুক আবদুল্লাও। সেই অবস্থায় ওমর মানুষকে ইন্ধন জোগাচ্ছেন কীভাবে, তার সদুত্তর মেলেনি ওই নথিতে।