kerala

Kerala Gold Scam: বিরিয়ানির কৌটোয় ভরে সোনা, ব্যাগভর্তি টাকা গিয়েছে বিজয়নের কাছেও, দাবি অভিযুক্তের

মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেছেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ই এক জন অভিযুক্তের মাধ্যমে এই বয়ান দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২২ ০৭:০৩
Share:

পিনারাই বিজয়ন। ফাইল চিত্র।

সোনা পাচার কেলেঙ্কারির পুরনো মামলায় নতুন করে জলঘোলা শুরু হল কেরলের রাজনীতিতে। ওই কেলেঙ্কারিতে অন্যতম এক অভিযুক্ত জবানবন্দি দিয়ে দাবি করলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং পিনারাই বিজয়নের কাছেও টাকা ও সোনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। টাকার ব্যাগ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেছিল দুবাইয়ে। আর বিরিয়ানির কৌটোতে ভরে সোনা পাঠানো হয়েছিল তিরুঅনন্তপুরমে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি আবাসে! মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেছেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ই এক জন অভিযুক্তের মাধ্যমে এই বয়ান দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরে সোনা ভর্তি ব্যাগ ধরা পড়ার পরেই সামনে এসেছিল পাচার-কাণ্ড। সেই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশ এক সময়ে দুবাইয়ে ভারতীয় দূতাবাসে কাজ করতেন। তাঁকে গ্রেফতার করার পরে ওই ঘটনার সূত্রে ধরা পড়েন কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সচিব এম শিবশঙ্কর। ঘটনার তদন্ত ভার হাতে নিয়েছে ইডি, এনআইএ-সহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই। তখন থেকেই ঘটনার সঙ্গে বিজয়নের নাম যোগ করার জন্য ‘চাপ’ দেওয়া হচ্ছে বলে এক সময়ে অভিযোগ করেছিলেন শিবশঙ্কর। তার পরেও গত বছর বিধানসভা ভোটে জিতে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেছে বিজয়নের সরকার। এখন আবার স্বপ্নার অভিযোগের জেরে কেরলের রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে।

কোচির একটি আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন স্বপ্না। সেই বয়ান অসম্পূর্ণ ছিল বলে স্বপ্না দাবি করায় আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার ফের তাঁর জবানবন্দি নথিভুক্ত করা হয়েছে। পরে স্বপ্নার দাবি, ‘‘জবানবন্দিতে সব বলেছি। আশা করি, বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে।’’ কী বলেছেন জবানবন্দিতে? স্বপ্নার অভিযোগ, ‘‘সোনা-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন, তাঁর স্ত্রী কমলা, মেয়ে বীণা (যাঁর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে ডিওয়াইএফআইয়ের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি মহম্মদ রিয়াজ়ের এবং এখন তিনি বিজয়ন মন্ত্রিসভায় পূর্তমন্ত্রী), শিবশঙ্কর এবং প্রাক্তন মন্ত্রী কে টি জলিল সুবিধা পেয়েছেন। সব কথাই জবানবন্দিতে বলা আছে।’’ স্বপ্নার দাবি, ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন যখন আরব আমিরশাহি সফরে ছিলেন, সেই সময়ে দুবাইয়ের দূতাবাসের মাধ্যমে একটি ব্যাগ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ করেন শিবশঙ্কর। দূতাবাসের প্রোটোকল মেনে সেই ব্যাগ স্ক্যান করে দেখা গিয়েছিল, তাতে টাকা আছে। কোন মুদ্রা ছিল, তা অবশ্য স্বপ্না বলেননি। আর মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি আবাস ‘ক্লিফ হাউসে’ বিরিয়ানির কৌটোয় সোনা পাঠানো হয়েছিল।

Advertisement

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন পত্রপাঠ বিবৃতি দিয়ে পাল্টা বলেছেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক চিত্রনাট্যের অঙ্গ। ওই চিত্রনাট্য মানুষের দরবারে এক বার খারিজ হয়েছে। স্বল্প বিরতির পরে এখন আবার এক অভিযুক্তের বয়ানে একই কথা বলানো হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘অর্থনৈতিক অপরাধের শিকড় খুঁজে বার করা ও সত্য উদঘাটনের পথে যাঁরা আপস না করার অবস্থান নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বারবারই মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়।’’

স্বপ্নার অভিযোগকে হাতিয়ার করে কেরলের বিরোধী দলনেতা ভি ডি সতীশনের দাবি, ‘‘পদত্যাগ করে বিজয়নের উচিত নিরপেক্ষ তদন্ত হতে দেওয়া।’’ কংগ্রেসের আর এক বর্ষীয়ান নেতা রমেশ চেন্নিতালার মন্তব্য, ‘‘আমরা আগেই বলেছি, বিজয়নই সোনা-কাণ্ডের পা‌ণ্ডা! আশা করি, বিচার সম্পূর্ণ হবে।’’ সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য এ বিজয়রাঘবনের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘বিরিয়ানির কৌটোয় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সোনা যাচ্ছে— সত্যিই অভাবনীয় অভিযোগ!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement