ট্রাম্প-রাখি: আমেরিকায় পাঠানোর আগে মারোরার মেয়েরা। ছবি: পিটিআই।
এক দাদা দিল্লিতে। আর অন্য দাদা থাকেন ওয়াশিংটনে। দিল্লির দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের বেশি নয়। তাই সেখানে তো বটেই, হরিয়ানার মারোরা গ্রাম থেকে ১০০১টা রাখি যাচ্ছে হোয়াইট হাউসেও। মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও এ বার ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে বাঁধতে চাইছেন মুসলিম অধ্যুষিত এই প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলারা। গ্রামেরই বাসিন্দা বছর পনেরোর রেখা রানির কথায়, ‘‘ট্রাম্প ভাইয়ার জন্য গত তিন দিনে ওঁর ছবি দিয়ে ১৫০টা রাখি বানিয়েছি। সঙ্গে একটা চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছি। বলেছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখানে আসুন। আমরা সবাই আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাই।’’ দিল্লির ‘ভাই’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্যও ৫০১টা রাখি পাঠিয়েছে মারোরা গ্রামের মহিলারা।
রাখি যে কী, ট্রাম্প হয়তো জানেনই না। তবু তাঁর জন্য হঠাৎ এই আয়োজন কেন? তা-ও আবার এমন একটা গ্রাম থেকে, যেখানকার ১৮০০ বাসিন্দার অনেকেই মাস দু’য়েক আগেও ট্রাম্পের নামই শোনেননি! রহস্যভেদ করলেন ‘সুলভ ইন্টারন্যাশনাল’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান বিন্দেশ্বর পাঠক। গত জুনের শেষে মোদী যখন আমেরিকা সফরে গেলেন, তার ঠিক আগে এই গ্রামের নাম বদলে ‘ট্রাম্প গাঁও’ রাখেন সুলভ কর্তৃপক্ষ। মার্কিন প্রেসি়ডেন্টের ছবি-মালা সহ বেশ কয়েকটি পোস্টার, ব্যানারও প়ড়ে যায় মারোরায়। বিন্দেশ্বর সে বার যুক্তি দিয়েছিলেন, ভারত-মার্কিন সম্পর্ক সুদৃঢ় করতেই এই নামবদল। যদিও স্থানীয় প্রশাসন তা মেনে নেয়নি। ‘স্বচ্ছ ভারত’ তো মোদীর প্রকল্প! তাই গ্রামে শৌচাগারের কাজ করতে গিয়ে খামোখা মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রচারও মানতে চাননি অনেকে। তাই সপ্তাহ ঘোরার আগেই মারোরা থেকে খুলে ফেলা হয় সব ছবি-পোস্টার। কিন্তু গ্রামের ট্রাম্প-প্রীতি যে যায়নি, তা স্পষ্ট হয়ে গেল রাখি আসতেই। ভিন্ দেশি দাদার জন্য এ বার দ্বিগুণ সংখ্যক রাখি নিয়ে গেল কার্গো বিমান। বিন্দেশ্বর বলছেন, এ-ও দু’দেশের সম্পর্ক পোক্ত করতেই।