আজাদ শিবিরে ভাঙন জম্মু ও কাশ্মীরে। ফাইল চিত্র।
পাঁচ মাসেই উলটপুরাণ! গত অগস্টে গুলাম নবি আজাদ দল ছাড়ার পরেই পদত্যাগের হিড়িক দেখা গিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীর কংগ্রেসে। কেন্দ্রশাসিত ওই অঞ্চলের প্রাক্তন মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়কদের অনেকেই নাম লিখিয়েছিলেন নয়া দল ‘ডেমোক্র্যাটিক আজাদ পার্টি’-তে। কিন্তু মোহভঙ্গ হওয়ায় আবার কংগ্রেসে ফিরতে শুরু করেছেন তাঁরা।
চলতি মাসেই জম্মু ও কাশ্মীরে পৌঁছবে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড় যাত্রা’। তার আগে শুক্রবার কংগ্রেসে ফিরেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তারা চাঁদ-সহ একঝাঁক নেতা। পিরজাদা মহম্মদ সঈদ, মুজফ্ফর পেরারে, বলবান সিংহের মতো প্রভাবশালী প্রাক্তন মন্ত্রীরাও রয়েছেন এই দলে। দলত্যাগীদের কংগ্রেসে ফিরিয়ে এনে এআইসিসির পর্যবেক্ষক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘আজ জম্মু ও কাশ্মীরে কংগ্রেসের কাছে এক ঐতিহাসিক দিন।’’ তবে শুক্রবার কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নেতাদের কয়েক জনকে আগেই বহিষ্কার করেছিল আজাদ শিবির।
রাহুল গান্ধীকে তুলোধনা করে গত অগস্টে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আজাদ। অনুগামীদের নিয়ে তৈরি করেছিলেন ‘ডেমোক্র্যাটিক আজাদ পার্টি’। সম্প্রতি একাধিক খবরে দাবি করা হয়, আজাদের কংগ্রেসে ফেরার রাস্তা তৈরি হচ্ছে। চলছে আলোচনা। এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অখিলেশ প্রতাপ সিংহ, ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা এবং অম্বিকা সোনির মতো প্রবীণ নেতাদের। কংগ্রেসে গাঁধী পরিবারের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর অন্যতম মুখ ছিলেন আজাদ। অখিলেশ এবং ভূপেন্দ্রও ছিলেন জি-২৩-এ।
চলতি বছরের শেষে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হতে পারে। ইতিমধ্যেই সেখানে ‘সক্রিয়তা’ শুরু করেছে বিজেপি। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু প্রভাবিত ওই রাজ্যে আজাদই পদ্ম শিবিরের সেরা বাজি হতে পারেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা। কারণ, মুসলিম হলেও আজাদ কাশ্মীর উপত্যকার নেতা নন। উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে কখনওই তাঁর সখ্য ছিল না। ফলে অতীতে পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিকে মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন করে বিজেপিকে যে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল, এ ক্ষেত্রে তার সম্ভাবনা নেই। এই পরিস্থিতিতে একঝাঁক অনুগামীর দলত্যাগে আজাদের অবস্থান ‘নড়বড়ে’ হয়ে পড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে।