অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে গলার নলি কেটে খুন করে সস্ত্রীক আবাসনের ন’তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক ব্যবসায়ী। মৃত ওই ব্যবসায়ীর নাম গুলশন (৪৫)। মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাটি ঘটে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে। ওই একই আবাসন থেকে একই সময়ে ঝাঁপ দেন আরও এক মহিলা। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ভোর পাঁচটা কি সওয়া ৫টা। পর পর ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ পেয়েছিলেন নিরাপত্তারক্ষী আজাজ করিম খান। আবাসনের বাইরে বেরতেই চিত্কার করে ওঠেন তিনি। মাটিতে পড়ে রয়েছে পর পর তিন জন। এক জন পুরুষ ও দু’জন মহিলা। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল চারপাশ। গোঙানির আওয়াজ শুনে আরও একটু এগোতেই দেখেন তাঁদের মধ্যে এক মহিলা তখনও জীবিত। সঙ্গে সঙ্গে আবাসনের অন্য বাসিন্দাদের খবর দেন তিনি। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, ব্যবসায় মন্দা চলছিল গুলশনের। ধার-দেনাতেও জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। ফলে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছিলেন। তাই শেষমেষ আত্মহত্যার পথই বেছে নেন ওই ব্যবসায়ী। দুই সন্তানকে খুন করার পর স্ত্রীকে নিয়ে আবাসন থেকে ঝাঁপ দেন। গুলশনের ফ্ল্যাট থেকে তাঁর দুই সন্তানের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মাওবাদী বলে নিরীহ গ্রামবাসীদের মেরেছিল পুলিশ, ৭ বছর পর বিজাপুর গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ
আরও পড়ুন: ‘অনুপ্রবেশকারী’ ও ‘নির্বলা’ মন্তব্যে ক্ষমা চাইতে হবে অধীরকে, সংসদে শোরগোল বিজেপির
গাজিয়াবাদ পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক সুধীর কুমার জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে ব্যবসায়ীর দুই সন্তানের দেহ উদ্ধার হয়েছে। একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে ঘর থেকে। সেই নোটের পাশেই রাখা ছিল বেশ কিছু টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, সেই টাকা যেন তাঁদের সত্কারে ব্যবহার করা হয়, এমনটাই সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছেন গুলশন!
শুধুই কি ব্যবসায়িক মন্দা, নাকি এই মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রশ্ন উঠেছে, দ্বিতীয় মহিলা কেন আত্মহত্যা করতে গেলেন? রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে এখানেও। কে ওই মহিলা? এ নিয়ে ইন্দিরাপুরমের ওই এলাকায় গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, দ্বিতীয় মহিলা গুলশনের বিজনেস পার্টনার। কেউ আবার বলছেন, ওই মহিলা গুলশনের দ্বিতীয় স্ত্রী। সপরিবারে গুলশন কেন আত্মহত্যা করলেন সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টার পাশাপাশি, মহিলার পরিচয় এবং গুলশনের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল কিনা তার সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।