national news

৩০ বছর ধরে একা হাতে খাল কাটলেন লউঙ্গা

‘‘কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। রোজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে খাল কাটতে যেতাম জঙ্গলে, একা হাতে’’, বলেছেন গয়ায় লাথুয়ার কাছে কোথিলাওয়া গ্রামের বাসিন্দা লউঙ্গা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গয়া শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:২৪
Share:

লউঙ্গা ভুঁইয়া। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।

পাহাড়ি বৃষ্টির জলকে তাঁর গ্রামে চাষের মাঠে মাঠে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একাই দিন-রাত খেটে তিন কিলোমিটার লম্বা একটি খাল বানিয়েছেন লউঙ্গি ভুঁইয়া। কাজটা এক দিনে হয়নি। টানা ৩০ বছর ধরে খাল কেটে গিয়েছেন লউঙ্গি। বিহারের গয়ায়।

Advertisement

গল্প নয়, সত্যি। ‘‘কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। রোজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে খাল কাটতে যেতাম জঙ্গলে, একা হাতে’’, বলেছেন গয়ায় লাথুয়ার কাছে কোথিলাওয়া গ্রামের বাসিন্দা লউঙ্গা।

তিন কিলোমিটার লম্বা খাল একা হাতে কাটা তো মুখের কথা নয়। লউঙ্গার জীবনের প্রায় অর্ধেকটাই গিয়েছে খাল কাটতে। পাক্কা ৩০টি বছর।

Advertisement

লউঙ্গা বলেছেন, ‘‘খাল কেটে পাহাড়ি বৃষ্টির জলকে গ্রামের একটি পুকুরে মেশাতে ৩০টি বছর পার হয়ে গিয়েছে আমার জীবনের। এতগুলি বছর ধরে রোজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে যেতাম গরু-বাছুর চরাতে আর খাল কাটতে। একাই কাটতাম। তাই রোজই খাল কাটতাম একটু একটু করে। একটু বেলা হলেই যে চড়চড়ে রোদ উঠত। গা পুড়ে যেত গরমে। তখন আর পারতাম না। আবার কাজ শুরু করতাম পরের দিন ভোরে। গ্রামের আর সকলে সকালে ঘুম থেকে উঠে টাকা জন্য ছুটতেন শহরে। গ্রামের ক্ষেতে যে জল পৌঁছয় না, সে দিকে হুঁশ ছিল না কারও। কিন্তু আমি গ্রাম ছেড়ে নড়িনি কোথাও।’’

সেই খাল যা ৩০ বছর ধরে একাই কেটেছেন লউঙ্গা। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।

গয়া শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে কোথিলাওয়া গ্রামের চার পাশে ঘন জঙ্গল আর পাহাড়। মাওবাদীদের গোপন আস্তানা গাড়ার জায়গা হিসাবে যথেষ্টই পরিচিতি রয়েছে গ্রামটির। গ্রামের বাসিন্দাদের জীবিকা বলতে চাষবাস আর পশুপালন। কিন্তু জলকষ্টে চাষবাসে খুবই অসুবিধা হতো।

কাজের সময় কেউ এগিয়ে আসেননি। আজ অনেকেই সাবাশি দিচ্ছেন লউঙ্গাকে। গ্রামেরই এক বাসিন্দা পাত্তি মাঞ্জির কথায়, ‘‘কাজটা খুব সহজ ছিল না। একা হাতে খাল কেটেছেন লউঙ্গা কাকা। ৩০টি বছর ধরে। এতে ক্ষেতেখামারে জলসেচের সুবিধা তো হবেই, গ্রামের গরু-বাছুরগুলিও জল পাবে। নিজের জন্য এ সব করেননি লউঙ্গা কাকা। ৩০ বছর ধরে কাজটা করে গিয়েছেন, একাই।’’

লউঙ্গার কাজ নজর এড়িয়ে যায়নি গ্রামের স্কুলের শিক্ষক রামবিলাস সিংহেরও। ভুয়সী প্রশংসা করেছেন লউঙ্গার। বলেছেন, ‘‘গ্রামের বহু মানুষ এতে উপকৃত হবেন। ওঁর এই কাজের জন্যই এখন গোটা গ্রামে ওঁকে সেলাম ঠুকছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement