কথায় কথায় অভিযুক্তদের বাড়িতে বুলডোজ়ার চালানো কি যুক্তিযুক্ত? প্রশ্ন আদালতের। —প্রতীকী চিত্র।
কোনও মামলায় অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই বুলডোজ়ার দিয়ে তাঁদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি গো-বলয় থেকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যে এমনই প্রবণতা দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতি এই সংক্রান্ত একটি মামলায় অসম সরকারকে একহাত নিল গুয়াহাটি হাই কোর্ট। তদন্ত চলাকালীন এই ভাবে অভিযুক্তদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার এই প্রবণতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আদালত। পাশাপাশি এক পুলিশ সুপারের নির্দেশে ৫ অভিযুক্তের বাড়ি ভেঙে ফেলার অভিযোগে তাঁর একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল হাই কোর্ট।
এখানেই শেষ নয়। কোন আইন বলে কারও বাড়ি বুলজোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া যায়, এ নিয়ে অসম সরকারেরও প্রতিক্রিয়া চেয়েছে গুয়াহাটি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি আর এম ছায়া এবং বিচারপতি সৌমিত্র সইকিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার শুনানি চলাকালীন সরকারি পক্ষের আইনজীবীকে আদালতের জিজ্ঞাসা, ‘‘আপনি আমাদের একটি অপরাধ মামলার আইন দেখান, যেখানে তদন্ত চলাকালীন কোনও নির্দেশ ছাড়াই পুলিশ অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙতে যায়।’’
সরকারি পক্ষের আইনজীবী আদালতকে বোঝাতে চান, এর ফলে কাউকে ঘরছাড়া করা হয়নি। কিন্তু আদালতের কাছে এই যুক্তি ধোপে টেকেনি। সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারের উদ্দেশে করে হাই কোর্টের মন্তব্য, ‘‘উনি এসপি হতে পারেন। কিন্তু কারও বাড়ি ভেঙে ফেলার অধিকার কারও নেই।’’ আদালত এ-ও বলে, ‘‘এই রকম কাজের অনুমোদন দেওয়া হলে এ দেশে কেউই নিরাপদ থাকবেন না।’’
প্রসঙ্গত, জেল হেফাজতে এক বন্দির মৃত্যুর পর থানা আক্রমণ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। এর পর তাঁদের মধ্যে ৫ জনের বাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। মামলা ওঠে হাই কোর্টে। সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালত ত্রিপুরা পুলিশ প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া চেয়ে নোটিস দিয়েছে। আগামী ১৩ ডিসেম্বর রয়েছে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।