গণধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন এক তরুণী। ২৭ সপ্তাহের সেই ভ্রূণ নষ্ট করার অনুমতি চেয়ে গুজরাত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন তিনি।
ঘটনার শুরুটা হয়েছিল গত বছরের মাঝামাঝি। জুলাই মাসে বাড়িতে ঢুকে বছর চব্বিশের ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে যায় সাত জনের একটি দল। আট মাস ধরে নানা জায়গায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রাখা হয় তাঁকে। শেষে এক দিন অপরহণকারীদের নজর এড়িয়ে পালান ওই তরুণী। তবে এর মধ্যেই লাগাতার গণধর্ষণে গর্ভবতী হয়ে পড়েন তিনি। স্ত্রী এই ভাবে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। কিন্তু সাহায্য মেলেনি সেখান থেকে।
আট মাস পর যখন বাড়ি ফেরেন, তত দিনে ওই তরুণী ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। সময় নষ্ট না করে গর্ভপাতের আর্জি জানিয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তিনি দ্বারস্থ হন নিম্ন আদালতের। কিন্তু ১৯৭১-এর গর্ভপাত আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী ভ্রূণের বয়স কুড়ি সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে আর তা নষ্ট করা যায় না। গত ২৬ মার্চ এই আইনের উল্লেখ করে তরুণীর আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক।
দু’সপ্তাহ পরে হাইকোর্টে ফের একই আর্জি জানান নির্যাতিতা। তাঁর কথায়, ‘‘ধর্ষণের পরও স্বামীর কাছে আছি। কিন্তু এই সন্তান জন্ম দিলে আমাকেই বাড়ি থেকে বার করে দেবে সকলে।’’ গর্ভস্থ সন্তান আলো দেখুক, চান না তরুণীর পরিবারের কেউ। আর কোনও উপায় না দেখে তাই আদালতের শরণাপন্ন তিনি। তবে ভ্রূণের বয়স কুড়ি সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পর তা নষ্ট করলে মায়ের শরীরের উপরও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে পুরোদস্তুর। গত কাল হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে সেই প্রসঙ্গ উঠেছিল। কিন্তু এ কথা জেনেও গর্ভপাতের সিদ্ধান্তেই অনড় ওই তরুণী। বিচারপতি জে বি পরদিওয়ালা ধর্ষিতা তরুণীর কথা শুনেছেন কাল। তবে রায় ঘোষণা করেননি তিনি।
গুজরাত সরকারকেই বরং এর সমাধান সূত্র খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। সন্তান জন্মালে তাকে অনাথ আশ্রমে বড় করা যায় কি না, সে কথাও প্রশাসনকে ভেবে দেখতে বলেছে হাইকোর্ট।