মুখোমুখি। নিজস্ব চিত্র।
তেলঙ্গানার মেদাক জেলার তোপরান। গত জুলাইতে এখান থেকেই প্রথম বারের জন্য ভোটার হিসেবে নাম নথিভুক্ত করেছিলেন চারণকবি গদর।
বরাবর নকশাল রাজনীতিতে বিশ্বাসী গদর কি তা হলে সংসদীয় গণতন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতে শুরু করলেন? প্রশ্নটা উঠেছিল তখনই। মঙ্গলবার অবশ্য সেই ধোঁয়াশা পরিষ্কার করে দিলেন গদর নিজেই। সংবাদ মাধ্যমকে এই জনপ্রিয় চারণকবি জানালেন, তেলঙ্গানার গাজওয়েল কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। এই কেন্দ্র থেকেই ভোটে দাঁড়ান তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। সেক্ষেত্রে তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি-র সুপ্রিমোকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাতে চলেছেন গদর।
বন্দুকের নলই হল ক্ষমতার উৎস। সশস্ত্র সংগ্রামের এই রাজনীতিতে বিশ্বাসী গদর কি তা হলে ভোটিং মেশিনের মধ্যেই ক্ষমতার নতুন উৎস খুঁজে পেলেন? এই প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেননি গদর। তবে বলেছেন, ‘‘এটা উল্টোপথে হাঁটা নয়। সংসদে তেলঙ্গানা রাষ্ট্রের সমর্থনে বিল আনার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম আমি। তখনও সেটা উল্টো পথে হাঁটা ছিল না। পুরো মাওবাদী দলটিই নির্বাচনে অংশ নিলে সে রকম বলা যেত।’’
আরও পড়ুন: মুসলিম যুবককে ভালবাসার ‘শাস্তি’, মেরঠে ডাক্তারির ছাত্রীকে গাড়িতে তুলে মারল পুলিশ
কিন্তু তিনি নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন কেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে গদর এনেছেন ১৯৯৭ সালের একটি প্রসঙ্গ। হায়দরাবাদে নিজের বাড়ির সামনে তিন আততায়ীর বুলেটে বিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। এখনও মেরুদণ্ডের কাছে ঢুকে থাকা একটি বুলেট বের করতে পারেননি চিকিৎসকেরা। গদর মনে করেন অন্ধ্র পুলিশের যোগসাজশেই হয়েছিল এই হামলা। কারণ কুড়ি বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত এই হামলার ঘটনায় এক জনকেও গ্রেফতার করেনি অন্ধ্র পুলিশ। দোষীদের ধরার দাবিতে এই বছরের শুরুতেই ভারতের রাষ্ট্রপতিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন গদরের স্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর দফতর হয়ে সেই চিঠি এসে পৌঁছয় তেলঙ্গানা মুখ্যমন্ত্রীর কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের অফিসে। তিন মাস আগে কে চন্দ্রশেখর রাওকে চিঠি লিখে দেখা করতে চান গদরও। কিন্তু আজ পর্যন্ত কে চন্দ্রশেখর রাও তাঁকে কোনও সময় দেননি। সেই ক্ষোভের জায়গা থেকে কেসিআর-কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করতেই তিনি ভোটের ময়দানে। সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন গদর।
সাতের দশকের নকশাল আন্দোলনের সময় থেকেই অন্ধ্রের প্রতিবাদী মানুষদের আন্দোলনের মুখ ভিত্তল রাও ওরফে গদর। আটের দশকে দীর্ঘ দিন ছিলেন ‘আন্ডার গ্রাউন্ডে’। নয়ের দশকে ‘পিপলস ওয়ার’ তাঁকে দল থেকে বরখাস্ত করলেও সশস্ত্র সংগ্রামের বিশ্বাস থেকে কখনওই সরে দাঁড়াননি গদর। ২০০২ সালে চন্দ্রবাবু নাইডু সরকারের আলাপ আলোচনার সময় তাঁকেই দূত হিসেবে বেছে নিয়েছিল মাওবাদীরা।
আরও পড়ুন: রাস্তায় উঠে আসছে ১০ ফুট উঁচু ফেনার স্রোত, আতঙ্কে বেঙ্গালুরুবাসী
যদিও বিরোধী জোটের সম্মিলিত প্রার্থী হচ্ছেন কিনা, তা নিয়ে এখনও রয়েছে ধন্ধ। কারণ, গাজওয়েল কেন্দ্র থেকে ইতিমধ্যেই চন্দ্রশেখর রাওয়ের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী প্রতাপ রেড্ডি। এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে গদর জানিয়েছেন, ‘‘ এটা কংগ্রেসের বিষয়। আমার হাতে তো কিছু নেই।’’
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)