আগামী ২২ নভেম্বর ভিডিয়ো মাধ্যমে জি২০-র বৈঠক হবে। —ফাইল চিত্র।
দু’মাস আগে ভারতমণ্ডপমে জি২০ সম্মেলনের শেষ দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, ভারতের সভাপতিত্ব থাকতে থাকতে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলির আরও একটি বৈঠক (ভিডিয়ো মাধ্যমে) হবে। সে সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব রাজনীতি ব্লকে বিভক্ত ছিল, কিন্তু তখনও এমন জটিল হয়ে ওঠেনি।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২২ নভেম্বর ভিডিয়ো মাধ্যমে হবে জি২০-র সেই বৈঠকটি। কিন্তু সাউথ ব্লকের অস্বস্তি বাড়িয়েছে চরম মেঘাচ্ছন্ন কূটনৈতিক আকাশ। ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘাত ঘিরে আন্তর্জাতিক বিবাদ ক্রমশ বড় আকার নিচ্ছে। ভারতের ভূমিকা নিয়ে আরব দুনিয়ায় প্রশ্ন উঠছে। ইজ়রায়েল ঘেঁষা নীতি নেওয়ায় প্রশ্নের মুখে মোদীর বিদেশনীতি। অন্য দিকে, জি২০-র অন্যতম রাষ্ট্র কানাডার সঙ্গে চলছে সংঘাত। এই অবস্থায় আবারও একটি জি২০-র আয়োজন করে ‘বিশ্বগুরু’র মহিমা বৃদ্ধির কোনও সুযোগই আপাতত নেই বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। বরং বিভেদ, বিচ্ছিন্নতার বার্তাই প্রকট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে না বৈঠকের পরে। বড় জোর ভারতের তরফে প্রেস বিবৃতি দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী বক্তৃতাটুকুই সম্প্রচার করা হবে বলে এখনও পর্যন্ত স্থির আছে। বাকিটা হবে রুদ্ধদ্বার সম্মেলন।
বিদেশ মন্ত্রক মনে করিয়ে দিচ্ছে, জি২০-তে বছরে একটির বেশি সম্মেলন আগেও হয়েছে। ২০২১ সালে ইটালিতে একটি বাড়তি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে সেটি হয়েছিল তালিবান আফগানিস্তান দখলের পরে, কাবুল পরিস্থিতি নিয়ে। সরকারের এক আধিকারিকের মতে, এই সম্মেলনটির মাধ্যমে সব দেশই একবার সুযোগ পাবে সেপ্টেম্বরের বৈঠকে যে প্রস্তাব এবং সুযোগগুলি তৈরি করা হয়েছে, সেগুলিকে আরও একবার খতিয়ে দেখার। বিভিন্ন বিষয়ে ভারত তার মতামত জানাবে। ভারত উন্নয়নের যে কর্মসূচি সামনে নিয়ে এসেছিল, সেটিকেও পাখির চোখ করা হবে।
আগামী ১ ডিসেম্বর ভারতের সভাপতিত্বের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী গত মাসেই জানিয়েছেন, প্রত্যেকটি দেশকেই এই ভিডিয়ো সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভারত আশা করছে সন্তোষজনক প্রতিনিধিত্ব হবে। কিন্তু কানাডার স্পিকার অনুপস্থিত ছিলেন গত মাসে নয়াদিল্লিতে আয়োজিত পি২০ সম্মেলনে। দু’মাস হয়ে গেল কানাডার সঙ্গে ভারতের টানাপড়েন চলছে। খলিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিংহ গুজ্জরের হত্যায় ‘ভারতের হাত’ থাকার অভিযোগ তোলার পর নিরবচ্ছিন্ন বাগ্যুদ্ধ চলছে। বিতর্কে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে আমেরিকাকেও। ফলে ভারতের সভাপতিত্বে আসন্ন জি২০ ভিডিয়ো সম্মেলনে কানাডা থাকবে কি না তা এখনও অনিশ্চিত।