Manipur Violence

বিরোধী সফরের আগেই ফের অগ্নিগর্ভ মণিপুর

অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ১০ জন কুকি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন কুমায়ুন রেজিমেন্টের এক জওয়ান, বিষ্ণপুর পুলিশের এক কমান্ডো ও তিন গ্রামরক্ষী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৩ ০৮:২০
Share:

যন্তর মন্তরে কুকি মহিলা সংগঠনের বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।

দিল্লি থেকে বিরোধী জোটের ২০ জন সাংসদ মণিপুর সফরে আসতে চলেছেন ২৯ জুলাই। তার আগে যেন নতুন করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল মণিপুর। গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে বিষ্ণুপুর ও চূড়াচাঁদপুর জেলার সীমানাবর্তী এলাকাগুলিতে বিক্ষিপ্ত গুলির লড়াই চলছে। অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ১০ জন কুকি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন কুমায়ুন রেজিমেন্টের এক জওয়ান, বিষ্ণপুর পুলিশের এক কমান্ডো ও তিন গ্রামরক্ষী। বৃহস্পতিবার দুই ট্রাকে করে কুকি জঙ্গিদের আসতে দেখে পুলিশ বাধা দিলে তুমুল সংঘর্ষ হয়। দুই তরফেই রকেট প্রপেলড গ্রেনেড ও বোমা ছোড়া হয়েছে। জখমেরা রাজ মেডিসিটি ও বিষ্ণুপুরজেলা হাসপাতালে ভর্তি। স্থানীয় সূত্রে বলা হয় সংঘর্ষে অন্তত ১০ জঙ্গি মারা গিয়েছে। পুলিশের তরফে নিহতের সংখ্যা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তাদের বক্তব্য, দেহগুলি জঙ্গিরা নিয়ে গিয়েছে। তাই তাদের তরফে নিহতের সংখ্যা প্রকাশ না করা হলে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। গত রাত থেকেফের কোউট্রুক ও সেকমাইয়ের মধ্যবর্তী অংশে গুলি চলছে। মনমফাইতে বিএসএফ ওজঙ্গিদের মধ্যে লড়াই হয়। আজ গুলির লড়াই হয় লামকায়।

Advertisement

বিরোধী জোটের সাংসদদের শনিবার সকালে প্রথমে চূড়াচাঁদপুরের শরণার্থী শিবিরে যাওয়ার কথা। প্রশ্ন উঠেছিল, এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে রাজ্য কি সেই অনুমতি দেবে? কারণ তুলনামূলক শান্ত পরিস্থিতিতেও রাহুল গান্ধীকে বাধা দেওয়া হয়েছিল।রাজ্য সরকার অবশ্য বলে, তারা কাউকে বাধা দিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ বলেন, রাজ্যের পরিস্থিতি সরেজমিনে এসে দেখে যান বিরোধী জোটের প্রতিনিধিরা। গণতন্ত্রে কাউকে আটকানো যায় না। রাজ্যের কোনও আপত্তি নেই।

পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে শুক্রবার বীরেন বলেন, “বিরোধীর কাজই বিরোধিতা করা। আমি ওদের জন্য নয়, মানুষের জন্য কাজ করি। এখন আমার কাজ শান্তি আনা। সম্প্রীতি ফেরাতে আমি কুকি, নাগা, মেইতেই, পাঙ্গাল সকলের কাছে প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছি। মণিপুরের জনতা আমার সঙ্গে আছে। এঁরা সকলেই আমার কাছের মানুষ। আমায় ওঁদের সঙ্গেই থাকতে হবে। যা হয়েছে তা আর না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কেন হয়েছে সেই সত্য তদন্ত কমিশন প্রকাশ করবে।” নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, তাঁদের মন্ত্রক ২৪ ঘণ্টাই রাজ্যের উপরে নজর রাখছে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। বীরেনের দাবি, কুকিদের একাংশ রাজ্যে অস্থিরতা বজায় রাখতে চাইছে। কিন্তু আম জনতা বিভাজন চান না। সকলে মিলেমিশে থাকতে চান। সরকার রাজ্য ভাগ করবে না।

Advertisement

মায়ানমার থেকে আসা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নতুন করে আসা ৭১৮ জন শরণার্থীকে আসাম রাইফেলস শনাক্ত করেছে। আমি অবৈধ শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে কেন্দ্রের তরফে অনুমতি পেয়েছি। তেমন নির্দেশ জেলাশাসকদের দেওয়া হয়েছে।’’ এর মধ্যেই মেইতেই সংগঠনের তরফে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে দাবি করা হয়, কুকিরা ড্রোনের নীচে রকেট বেঁধে মেইতেই গ্রামে গিয়ে ফেলছে। তার বিস্তারিত ফুটেজও আপলোড করা হয়েছ। অবশ্য ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

কুকিদের যৌথ মঞ্চ আইটিএফএফ শুক্রবার দাবি করে, সদ্য চালু হওয়া খোংসাং স্টেশনে ট্রেনে করে অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো হচ্ছে সরকারের জ্ঞাতসারে। তা কুকিদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখপাত্র সব্যসাচী দে জানান, মণিপুরে ৫ মে থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধছিল। এর পর মাত্র একটিই ট্রেন পণ্য নিয়ে খোংসাং গিয়েছে। তা ছাড়া খোংসাংস্টেশনেই টেরিটোরিয়াল আর্মির ঘাঁটি রয়েছে। তারা রেলের সম্পত্তি ও কর্মীদেরসুরক্ষায় নিয়োজিত। তাই আইটিএলএফের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

অন্য দিকে মিজ়োরামে কুকিদের হয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে মিছিলের পরে মেইতেইদের উপরে চাপ আরও বেড়েছে। প্রাক্তন জঙ্গিদের তরফে হুমকি আসার পরে পুলিশ নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেও অন্তত ৬০০ জন মেইতেই রাজ্য ছেড়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement