উদ্ধার হওয়া বন্দুক।
সোমবার মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে এক প্রাক্তন বিধায়ক এবং তাঁর দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা এন বীরেন সিংহ একথা জানিয়ে বলেন, ‘‘ধৃত তিন জনের কাছ থেকে তিনটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। আধাসামরিক বাহিনী অসম রাইফেলসের জওয়ানেরা তাঁদের সশস্ত্র আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।’’
প্রসঙ্গত, সপ্তাহ কয়েকের বিরতির পরে সোমবার নতুন করে হিংসা ছড়ায় মণিপুরে। রাজধানী ইম্ফলের চেকন অঞ্চলে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধায় সেনা এবং আধা সামরিক বাহিনীকে তলব করা হয়। নতুন করে জারি করা হয় কার্ফু। পুলিশ সূত্রের খবর, চেকন বাজারে মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর কয়েক জনের বচসা থেকে অশান্তির সূত্রপাত। প্রথমে হাতিহাতি হয় দু’তরফে। তার পরেই লাঠি এবং ধারালো অস্ত্র এবং বন্দুক নিয়ে শুরু হয় সংঘর্ষ।
সংঘর্ষে আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। বাজার এলারা বেশ কিছু দোকান এবং বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল মণিপুরে। আদি বাসিন্দা মেইতিই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি জনজাতি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের জেরে সে রাজ্যে সরকারি হিসেবে ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহতের সংখ্যা প্রায় ৩০০।
গোষ্ঠীহিংসার জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ! মিজোরাম সরকার সোমবার জানিয়েছে, সে রাজ্যে কুকি এবং অন্যান্য জনজাতি গোষ্ঠীর সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। মণিপুর হাই কোর্ট সম্প্রতি মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিজেপি শাসিত ওই রাজ্যে। যদিও হিংসা ঠেকাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সময়োচিত ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ বিরোধীদের।