প্রতীকী চিত্র।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশই দীর্ঘ হচ্ছে পেগাসাসের সম্ভাব্য নজরদারিতে থাকা ব্যক্তিদের তালিকা। পেগাসাসের ফাঁস হওয়া তথ্যভান্ডার নিয়ে তদন্তকারী সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, তালিকায় রয়েছেন জেট এয়ারওয়েজের প্রাক্তন পরিচালক নরেশ গয়াল থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেল ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রধান বি সি ত্রিপাঠী। সেইসঙ্গে রয়েছেন দক্ষিণ ভারতের বেশ কয়েক জন রাজনৈতিক কর্মী।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে জেট এয়ারওয়েজে আর্থিক সঙ্কটের জেরে সংস্থার পরিচালন পর্ষদ থেকে ইস্তফা দেন নরেশ গয়াল ও তাঁর স্ত্রী অনিতা। ওই বছরেরই মে মাসে মুম্বই বিমানবন্দর থেকে বিদেশ যাওয়ার সময়ে আটকানো হয় নরেশ ও অনীতাকে। পেগাসাস নিয়ে তদন্তকারী সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, ওই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে পেগাসাসের তথ্যভান্ডারে দেখা দিয়েছে নরেশের নম্বর। মাসখানেক পরে নরেশের বিদেশে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। সেই সময় থেকেই পেগাসাস-তথ্যভান্ডারে আর তাঁর নম্বর দেখা যাচ্ছে না। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে জেট গোষ্ঠীর একাধিক সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত শুরু করে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক। গত কয়েক বছরে নরেশের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়েছে ইডি-ও।
তদন্তকারী সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, পেগাসাস ভান্ডারে দেখা মিলেছে রোটোম্যাক পেনস সংস্থার কর্ণধার বিক্রম কোঠারি ও তাঁর ছেলে রাহুল এবং মোবাইল সংস্থা এয়ারসেলের প্রাক্তন কর্ণধার সি শিবশঙ্করণের নম্বরেরও। এই দু’জনের বিরুদ্ধে মূলত ব্যাঙ্ক ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, তদন্তের গতিপ্রকৃতির সঙ্গে পেগাসাস ভান্ডারে কোঠারি ও শিবশঙ্করণের নম্বরের দেখা মেলার সামঞ্জস্য রয়েছে। যেমন আইডিবিআই কেলেঙ্কারিতে শিবশঙ্করণের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের মাসখানেক আগে থেকে পেগাসাস ভান্ডারে দেখা মিলেছে তাঁর নম্বরের। তালিকায় রয়েছেন স্পাইসজেটের চেয়ারম্যান অজয় সিংহ, গেল ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রধান বি সি ত্রিপাঠী, রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্তা ভি বালাসুব্রমনিয়ান ও রিলায়্যান্স এডিএ গোষ্ঠীর কর্তা এ এন সেথুরামনও।
সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, গেলের শীর্ষ পদের দায়িত্ব নেওয়ার এক মাস পর থেকে বি সি ত্রিপাঠীর নম্বরের দেখা মিলছে পেগাসাস তালিকায়। তার পরে এক বছর ধরে বেশ কয়েক বার তাঁর নম্বর দেখা গিয়েছে ওই তালিকায়। অন্য দিকে অবিভক্ত রিলায়্যান্স গোষ্ঠীতে কাজ করার সময়ে সরকারি গোপন নথি চুরির মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছিল বালাসুব্রমণিয়ান ও সেথুরামনের বিরুদ্ধে। পরে রিলায়্যান্স গোষ্ঠী এবং ওই দুই কর্তার বিরুদ্ধে মামলা চালানোর নির্দেশ খারিজ করে দিল্লি হাই কোর্ট।
সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, দক্ষিণ ভারতের বেশ কয়েক জন রাজনৈতিক কর্মীরও নম্বর রয়েছে পেগাসাস ভান্ডারে। যেমন, মে ১৭ আন্দোলন সংগঠনের নেতা থিরুমুরুগান গাঁধী, নাম থামিজ়ার কাটচি সংগঠনের সীমন, থানথাই পেরিয়ার দ্রাবিদাড় কাজ়গমের কে রামকৃষ্ণন ও দ্রাবিদাড় কাজ়গমের কোষাধ্যক্ষ কুমারেসন। থিরুমুরুগান গাঁধী ২০১৮ সালে ইউএপিএ ও গুন্ডা আইনে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তিনি শ্রীলঙ্কার তামিলদের অধিকার, স্টারলাইট আন্দোলন-সহ একাধিক বিষয়ে সরকারের বিরোধিতা করেছেন।