লালুপ্রসাদ যাদব। —ফাইল চিত্র।
পশুখাদ্য দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। শনিবার ‘দুমকা ট্রেজারি’ মামলায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট। মোট চারটি পশুখাদ্য মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন লালু। তবে এ বার তিনি জেল থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। কারণ পুরনো তিনটি মামলায় আগেই জামিন পেয়েছেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই এ বার বাড়ি যাবেন তিনি।
এর আগে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি লালুর জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল আদালত। দুমকা কোষাগার থেকে ৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা বেআইনি ভাবে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দু’টি ধারায় ৭ বছরের জেল হয়েছিল তাঁর। তার পর শনিবার জামিন মঞ্জুর হয়ে গেলেও, আদালতের অনুমতি ছাড়া লালু দেশের বাইরে যেতে পারবেন না এবং ঠিকানা ও ফোন নম্বরও পাল্টাতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি অপরেশকুমার সিংহ।
তবে জামিন পেলেও, বাবার স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন লালুপুত্র তেজস্বী যাদব। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘সুবিচার পাওয়া নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম আমরা। লালুজি অর্ধেক সাজা কাটিয়ে ফেলেছেন। তার ভিত্তিতেই তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে। হাউকোর্টকে ধন্যবাদ। এখন এমসে ভর্তি রয়েছেন উনি। জামিন পেয়েছেন। তবে ওঁর স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি আমরা।’’
পশুখাদ্য দুর্নীতির মোট চারটি মামলায় ২০১৭-র ডিসেম্বর থেকে জেলবন্দি লালু। যদিও কারাবাসের বেশিরভাগ সময়টাই ঝাড়খণ্ডের রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস হাসপাতালে (রিমস) কাটিয়েছেন তিনি। স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায় এ বছর জানুয়ারি মাসে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)-এ সরিয়ে আনা হয় তাঁকে। এই মুহূর্তে সেখানেই রয়েছেন তিনি।
লালুর অনুপস্থিতিতে এত দিন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তেজস্বী। গতবছর তাঁর নেতৃত্বেই বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পায় আরজেডি। দীর্ঘ চার দশকের রাজনৈতিক জীবনে ২০২০-তেই প্রথম বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে দেখা যায়নি লালুকে। তবে হাসপাতালে বসেই তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে সেই সময়। নির্বাচনী টিকিট পেতে হাসপাতালের বাইরে আরজেডি নেতাদের ভিড়ের ছবিও সেইসময় উঠে আসে সংবাদমাধ্যমে।
শুধু তাই নয়, ফোনে লালু বিরোধী পক্ষের নেতাদের দলে টানার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। তবে লালুর কারাবাসের জন্য বরাবরই বিজেপি এবং নীতীশ কুমার এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে আসছে আরজেডি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই ষড়যন্ত্র করে লালুকে জেলে ঢোকানো হয় বলে একাধিক বার দাবি করতে দেখা গিয়েছে দলের নেতাদের।