নির্মলা সীতারামন
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফল ঘোষণার দু’দিন পরেও উত্তেজনায় ফুটছে জেএনইউ। দেশের অন্যতম সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার রাতেও বামপন্থী ছাত্রদের সঙ্গে ঝামেলা বাধে গেরুয়াপন্থীদের। তার মধ্যেই বিতর্ক বাধিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী তথা দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা যে ভাবে ভারত বিরোধী শক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছেন, তা অস্বস্তিকর।
দিল্লির মহিলা প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার নির্মলা বলেন, ‘‘যে ভাবে জেএনইউ-এর ছাত্র সংগঠন ও দেশবিরোধী শক্তি এক সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলছে, তা অস্বস্তিকর।’’ তাঁর দাবি, ‘‘জেএনইউ ছাত্র সংগঠন তো ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে! অন্তত তাদের প্রচার পুস্তিকা পড়লে সেটাই মনে হয়।’’ একই সুরে এবিভিপির দাবি, জেএনইউয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাসে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের সহায়তায় মাওবাদী, অতি বাম চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত ব্যক্তিরা লুকিয়ে রয়েছেন। পুলিশ দিয়ে সব ছাত্রাবাসে তল্লাশি করার জন্য আজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছে এবিভিপি।
জেএনইউ ভারত-বিরোধী শক্তির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে আগেও অভিযোগ করেছেন নির্মলা। কানহাইয়া কুমার কাণ্ডের সময়েও তিনি একই কথা বললে তাঁকে সমর্থন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু-সহ একাধিক মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা। সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ উপাচার্য জগদেশ কুমার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগাতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ট্যাঙ্ক মোতায়েন করার প্রস্তাব পর্যন্ত দিয়ে বসেন। আসলে গত কয়েক বছর ধরেই সঙ্ঘ পরিবার তথা বিজেপি দেশের অন্যতম সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতা দখল করতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু সাফল্য পায়নি। সেই সূত্রেই গত কয়েক বছর ধরে জেএনইউ-এর পড়ুয়াদের দেশদ্রোহী ও বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশবিরোধী শক্তির আখড়া বলে বারবার দাবি করেছে গেরুয়াপন্থীরা।
বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের দাবি, জেএনইউ দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানে দাঁত ফোটাতে না পেরেই সঙ্ঘ পরিবার পরিকল্পিত ভাবে মিথ্যে বলছে। এক ছাত্রনেতার কটাক্ষ, ‘‘সঙ্ঘের পাঠশালায় পড়ে ওঁরা শুধু দাঙ্গা বাধানোটাই বোঝেন, আর কিছু না!’’
পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষক ও ছাত্রদের উপরে এবিভিপি সদস্যদের তাণ্ডবের প্রতিবাদে কাল দেশ জুড়ে প্রতিবাদ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম জোট। পাল্টা হিসেবে ক্লাস চলাকালীন পড়ুয়ারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সমস্ত বিভাগীয় প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।