লোকগায়িকা নেহা সিংহ রাঠোর। — ফাইল ছবি।
মধ্যপ্রদেশে এক দলিত ব্যক্তির গায়ে প্রস্রাব করার ঘটনা নিয়ে পোস্ট করে পুলিশি ব্যবস্থার মুখে পড়লেন ভোজপুরী লোকগায়িকা নেহা সিংহ রাঠোর। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন বিজেপির জনজাতি মোর্চার এক নেতা।
সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন নেহা। সেখানে রয়েছে একটি ছবি। যে ছবিতে অলংকরণের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে দু’জন মানুষকে। প্রস্রাবকাণ্ডের ঘটনার প্রেক্ষিতে সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি অর্ধনগ্ন অবস্থায় ধূমপান করতে করতে অন্য এক ব্যক্তির গায়ে প্রস্রাব করছেন। ধূমপানরত ব্যক্তির মাথায় কালো টুপি। পরনে সাদা জামা। কোমরে রয়েছে কালো বেল্ট। কিন্তু গেরুয়া হাফপ্যান্টটি পাশে রাখা।
এই ছবির মধ্যে দিয়ে নেহা আসলে আরএসএসকে অপমান করতে চেয়েছেন বলে দাবি মধ্যপ্রদেশে বিজেপির জনজাতি মোর্চার নেতা সূরয খাড়ের। যদিও ছবির কোথাও আরএসএস কথাটি লেখা নেই। নেহার পোস্ট সংক্রান্ত লেখাতেও আরএসএসের নামগন্ধ নেই। পোস্টের একেবারে উপরে স্বভাবসিদ্ধ ভাবে নেহা লিখেছেন, ‘‘এমপি মে কা বা?’’ (এমপিতে কী হয়েছে?)
এ বারই অবশ্য প্রথম নয়। গত ফেব্রয়ারিতেও নেহার বিরুদ্ধে নোটিস জারি করেছিল পুলিশ। সে বার প্রশাসনের কোপে পড়েছিল তাঁর ‘ইউপি মে কা বা— সিজন ২’-এর গান। যে গানের মধ্যে দিয়ে নেহা উত্তরপ্রদেশের আদিত্যনাথ সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। কানপুর দেহাতে উচ্ছেদ অভিযানে এক মা এবং তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনাকে সামনে রেখেই সমালোচনার সুরে গান বেঁধেছিলেন লোকশিল্পী নেহা। এতে পুলিশ নেহার বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে নোটিস জারি করে।
নেহা অবশ্য পুলিশের এফআইআর নিয়ে চিন্তিত নন। তিনি বলছেন, ‘‘সরকার জানে, আমি যে প্রশ্ন তুলছি তার জবাব দেওয়া তার কাছে অসম্ভব। তাই জবাব দেওয়ার চেষ্টা না করে তারা আমাকে নোটিস পাঠাচ্ছে। এ ভাবে আমাকে থামানো যাবে না।’’
প্রসঙ্গত, ক’দিন আগে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ প্রবেশ শুক্লা নামে এক ব্যক্তিকে এক দলিত ব্যক্তির গায়ে প্রস্রাব করার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় বিজেপিতে। প্রবেশকে গ্রেফতার করা হয়। যে ব্যক্তির গায়ে তিনি প্রস্রাব করছিলেন, তাঁকে বাড়িতে ডেকে এনে তাঁর পা ধুইয়ে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এ নামেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত, এই ঘটনা ভোটের আগে বিজেপির রক্তচাপ বৃদ্ধি করার পক্ষে যথেষ্ট। সেই ঘটনা নিয়েই ‘কটাক্ষ’ করার অভিযোগে এ বার এফআইআর হল জনপ্রিয় লোকগায়িকার বিরুদ্ধে।