লখনউয়ের ঠাকুরগঞ্জে এনকাউন্টার শেষে জঙ্গিদের ভাড়া নেওয়া বাড়ি থেকে মিলল এই পতাকা। ছবি: পিটিআই।
ভারতে প্রথম আইএস হানা— লখনউয়ের ঠাকুরগঞ্জে ১২ ঘণ্টার এনকাউন্টার শেষ হওয়ার পর এমনই জানাল এনআইএ। মধ্যপ্রদেশে মঙ্গলবার সকালে প্যাসেঞ্জার ট্রেনে বিস্ফোরণ আইএস-এরই কাজ বলে এনআইএ জানিয়েছে। খুব শীঘ্রই ভারতে বড় বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক ছিল আইএস-এর, তার মহড়া দিতেই মধ্যপ্রদেশের বিস্ফোরণ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এমনই খবর মিলেছে। লখনউ এনকাউন্টারে মৃত সইফুল্লা-সহ ৯ জঙ্গি ভারতের এই আইএস মডিউলটির সদস্য ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচ জন ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে।
ঠাকুরগঞ্জের বাড়ি ঘিরে তখনও তৎপর কম্যান্ডো বাহিনী। ছবি: পিটিআই
উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকিতে একটি সুফি দরগায় বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক কষেছিল আইএস। এক মাসের মধ্যেই এই বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিল তারা। বিস্ফোরক ঠিক মতো কাজ করছে কি না, নাশকতার ব্লু-প্রিন্ট অনুযায়ী কাজ করতে মডিউলের সব সদস্য প্রস্তুত কি না, সে সব খতিয়ে দেখতেই মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশে বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গি সংগঠনটি। ভোপাল-উজ্জয়িনী প্যাসেঞ্জারে ইচ্ছাকৃতই কম তীব্রতার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল, যাতে খুব বেশি হইচই না হয় এবং খুব শীঘ্রই নির্বিঘ্নে আসল লক্ষ্যে আঘাত হানা যায়। এনআইএ গোয়েন্দারা এমনই মনে করছেন। কিন্তু জাবলি স্টেশনের কাছে বিস্ফোরণের পর একেবারেই সময় নষ্ট করেনি পুলিশ এবং গোয়েন্দা বাহিনী। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে মঙ্গলবারই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের অন্যতম আতিফ মুজফ্ফর ভারতে তৈরি হওয়া আইএস মডিউলটির প্রধান, দাবি এনআইএ-র।
সউফুল্লাকে জীবিত অবস্থাতেই ধরতে চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ছবি: পিটিআই
আতিফ-সহ তিন জনকে জেরা করেই এনআইএ লখনউ এবং কানপুরে থাকা তিন জঙ্গির কথা জানতে পারে। কানপুর থেকে দু’জনকে সহজেই গ্রেফতার করে নেওয়া হয়। কিন্তু লখনউতে থাকা সইফুল্লাকে ধরতে গিয়ে পুলিশ প্রতিরোধের মুখে পড়ে। ১২ ঘণ্টা গুলির লড়াই চলে। সউফুল্লা কিছুতেই আত্মসমর্পণে রাজি হয়নি। ফলে তাকে জীবিত গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। ঠাকুরগঞ্জের যে বাড়িতে সউফুল্লা থাকছিল, বুধবার ভোরের দিকে সেই বাড়িতে ঢুকতে সক্ষম হয় কম্যান্ডো বাহিনী। বাড়ির ভিতর থেকে সইফুল্লার মৃতদেহ এবং বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং আইএস-এর পতাকা উদ্ধার হয়। যে বাড়ি ঘিরে অভিযান চালিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ, সেটির মালিক মধ্য এশিয়ার একটি দেশে কর্মরত বলে জানা গিয়েছে। কয়েক মাস আগে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে বাড়িটি ভাড়া নিয়ে নিয়েছিল সইফুল্লারা।
আরও পড়ুন: ১২ ঘণ্টার অভিযানে লখনউতে নিকেশ সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি
ভারতে তৈরি হওয়া আইএস মডিউলটিতে ৯ জন সদস্য ছিল বলে গোয়েন্দা সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে। তাদের মধ্যে ১ জন মৃত। ৫ জন ধৃত। বাকি ৩ জন কোথায়, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এনআইএ সূত্রের খবর, তাদের খোঁজও শুরু হয়েছে। কিন্তু এ সম্পর্কে কোনও তথ্য এখনও এনআইএ প্রকাশ করেনি। শুধু জানা গিয়েছে, আইএস-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাশকতার ছক কষার অভিযোগ যে ৯ জনের বিরুদ্ধে, তারা লখনউ এবং কানপুরের বাসিন্দা। প্রত্যেকের বয়সই ২০ বছরের আশেপাশে।