Uttar Pradesh

২৫ স্কুলে চাকরি, ১ কোটির জালিয়াতি, তরুণীর বিরুদ্ধে ৫ জেলায় এফআইআর

অনামিকা শুক্ল হিসাবে নিজের পরিচয় দিয়ে কস্তুরবা গাঁধী বালিকা বিদ্যালয়ের একাধিক শাখা-সহ আরও বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করছিলেন এক তরুণী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ২০:০৩
Share:

গ্রেফতার করা হয়েছে ওই তরুণীকে। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

উত্তরপ্রদেশে হইচই ফেলে দেওয়া সেই প্রাথমিক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পাঁচ জেলায় এফআইআর দায়ের হল। নাম ভাঁড়িয়ে একসঙ্গে ২৫টি স্কুলে শিক্ষকতা করা এবং সেই বাবদ বছরে ১ কোটি টাকা বেতন তোলার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে।তবে শিক্ষা দফতরের চোখ এড়িয়ে কী ভাবে এই ঘটনা ঘটালেন ওই মহিলা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

গত সপ্তাহের শেষ দিকে বিষয়টি সামনে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছিল উত্তরপ্রদেশে। তার পরই বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ জানান রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। তার ভিত্তিতে রায়বরেলী, অম্বেডকরনগর, বাগপত, আলিগড় এবং সাহরানপুর, এই পাঁচটি জেলায় এফআই আর দায়ের হয়েছে।

এই ঘটনায় শনিবার প্রিয়া সিংহ নামের এক তরুণীকে গ্রেফতার করেছে কাসগঞ্জ থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, অনামিকা শুক্ল হিসাবে নিজের পরিচয় দিয়ে কস্তুরবা গাঁধী বালিকা বিদ্যালয়ের একাধিক শাখা-সহ আরও বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী সতীশ দ্বিবেদী জানিয়েছেন, কস্তুরবা গাঁধী বিদ্যালয়েরই কমপক্ষে চারটি শাখায় শিক্ষকতা করছিলেন ওই তরুণী। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। আর কোথাও তিনি একই ঘটনা ঘটিয়েছেন কিনা দেখতে, ৭৪৬টি মেয়েদের আবাসিক স্কুলের রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: জ্বর নিয়ে আইসোলেশনে কেজরীবাল, কোভিড টেস্ট মঙ্গলবার​

এখনও পর্যন্ত যে পাঁচ জেলায় প্রিয়া সিংহের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে, তার বাইরেও বারাণসী, অমেঠী-সহ একাধিক জেলার বিভিন্ন স্কুলে ‘অনামিকা’ নামে শিক্ষকতা করেছেন অভিযুক্ত। তবে প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের তরফে এখনও পর্যন্ত সেখানে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। গোন্ডা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের আধিকারিক ইন্দ্রজিতের অভিযোগ, চাকরির জন্য যে সমস্ত নথিপত্র জমা দিয়েছেন প্রিয়া সিংহ তাতে দেখা গিয়েছে, কস্তুরবা বালিকা ইন্টার কলেজে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন অনামিকা শুক্ল। পারসপুরের বেণীমাধব জং বাহাদুর ইন্টার কলেজে পড়েন দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। ২০১২ সালে সেখানকার রঘুকুল মহিলা বিদ্যাপীঠ থেকে স্নাতক পরীক্ষায় পাশ করেন। তবে গোন্ডার কোনও স্কুলেই চাকরি নেননি অভিযুক্ত।

সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডিজিট্যাল ডেটাবেস তৈরি করতে উদ্যোগী হয় প্রাথমিক শিক্ষা দফতর। তাতেই এই ঘটনা সামনে আসে। প্রয়োজনে বিশেষ টাস্ক ফোর্সকে (এসটিএফ)-ও তদন্তে নামানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এডিজি আইন-শৃঙ্খলা প্রশান্তকুমার। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের সর্বত্র অনামিকা শুক্লর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় কিনা দেখছি। প্রয়োজন পড়ে স্পেশ্যাল সেল বা এসটিএফ-এর হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হবে।’’

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৯৯৮৩, মোট আক্রান্তে শুধু মহারাষ্ট্রই টপকে গেল চিনকে​

রায় বরেলীতে যে অভিযোগ জমা পড়েছে, তাতে প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের আধিকারিক আনন্দ প্রকাশ জানান, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে বিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে বছরাবাঁ কস্তুরবা গাঁধী বালিকা বিদ্যালয়ে যোগ দেন ওই তরুণী। সম্প্রতি বিষয়টি সামনে এলে দেখা যায়, অম্বেডকরনগর, সহারাণপুর, বাগপত, আলিগড়, বারাণসী, কাসগঞ্জ, অমেঠীতেও চাকরি করেছেন তিনি। তা নিয়ে একাধিক বার ডেকে পাঠানো হয় তাঁকে। কিন্তু একবারও দেখা করতে আসেননি তিনি। বরং গত ২৬ মে আচমকাই পদত্যাগপত্র জমা দেন। অসৎ আচরণ, ছদ্মবেশে জালিয়াতি, প্রতারণা এবং নথিপত্র জাল করার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অম্বেডকরনগদর এবং বড়ৌতেও তাঁর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement