জামিয়ার বাইরে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।
ফের গুলি চলল দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে রবিবার রাতেও বিক্ষোভ চলছিল সেখানে। তখনই স্কুটিতে চেপে দুই ব্যক্তি সেখানে হাজির হয় এবং শূন্যে গুলি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে গত দু’মাস ধরেই তেতে রয়েছে রাজধানী দিল্লি। তবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালানোর সূত্রপাত গত সপ্তাহে। তার পর থেকে গত চারদিনে এই নিয়ে তৃতীয় বার গুলি চলল সেখানে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়াদের নিয়ে গঠিত জামিয়া সমন্বয় কমিটির নেতৃত্বে রবিবার রাতেও এক দফা বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে, ৫ নম্বর ফটকের কাছে সেই বিক্ষোভে পড়ুয়ারা ছাড়াও বহু মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
অভিযোগ, সেইসময় রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ লাল রঙের একটি স্কুটিতে চেপে সেখানে হাজির হয় দুই ব্যক্তি। স্কুটিতে বসেই বেশ কয়েক বার শূন্যে গুলি চালায় তারা। গুলির শব্দে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে চারিদিকে। সেই সুযোগে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ঘটনার সময়কার একটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে এসেছে। তাতে হামলাকারীকে দেখা না গেলেও, প্রাণ বাঁচাতে এদিক ওদিক ছুটতে দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষকে। জামিয়া সমন্বয় কমিটির তরফে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, হামলাকারীদের মধ্যে এক জনের পরনে ছিল লাল রঙের জ্যাকেট।
প্রাণ বাঁচাতে ছুটছেন সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন: চিন থেকে কলকাতা হয়েই করোনা গিয়েছে কেরলে, উদ্বেগ
তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে কিছু জানা যায়নি বলে দাবি জামিয়া নগর পুলিশের। এমনকি হামলাকারীরা স্কুটিতে চেপে এসেছিল নাকি গাড়িতে, তা নিয়েও দ্বিমত রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অ্যাডিশনাল ডিসিপি কুমার জ্ঞানেশ। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘খবর পেয়েই পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে গুলির খোল বা সেই জাতীয় কিছু মেলেনি। কেউ বলছেন দুষ্কৃতীরা স্কুটিতে চেপে এসেছিল, তো কেউ আবার বলছেন গাড়িতে চেপে এসেছিল।’’
তবে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পড়ুয়াদের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় (খুনের চেষ্টা) এবং অস্ত্রআইনের ২৭ ধারায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ ও ৭ নম্বর ফটক সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এসিপি জগদীশ যাদব।
আরও পড়ুন: কথায় কাজ না-হলে গুলি, এ বার হুমকি যোগীর
এর আগে, গত সপ্তাহেই ভরদুপুরে জামিয়ার বাইরে সিএএ বিরোধী আন্দোলনে পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে গুলিয়ে চালায় বছর ১৭-র এক কিশোর। তাতে শাদাব ফারুখ নামের এক কাশ্মীরি পড়ুয়া জখন হন। সেই রেশ কাটার আগেই শনিবার পুলিশ ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে শাহিন বাগে গুলি চালায় আর এক যুবক। একের পর এক এই ধরনের ঘটনার জন্য অনুরাগ ঠাকুরের মতো বিজেপি নেতাদের ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্যকেই দায়ী করছেন বিরোধীরা।