নীরব কেলেঙ্কারিতে এ বার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিঠি দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিরোধীরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বাঁচতে চাইছে মোদী সরকার।
পিএনবি কেলেঙ্কারিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে কাঠগড়ায় তুলে কেন্দ্রের প্রশ্ন, তাদের নজরদারি এড়িয়ে কী ভাবে এত বড় দুর্নীতি হল? ব্যাঙ্কগুলির নিয়ন্ত্রক হিসেবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাদের ভূমিকা পালন করেনি কেন?
পিএনবি-র প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি সামনে আসতেই বিরোধীরা কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। মোদী সরকার প্রথমে ইউপিএ-জমানায় কেলেঙ্কারির শুরু বলে আক্রমণের তির ঘোরানোর চেষ্টা করলেও বাস্তব হল, মোদী জমানাতেই নীরব ও মেহুল চোক্সী সিংহভাগ ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হাতিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ৯০ কোটির বিক্রি নোটবন্দির রাতেই!
মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন গত কালই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, পিএনবি-র অভ্যন্তরীণ নজরদারি ব্যবস্থা ভেঙে পড়া নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু বাইরের নজরদারির কী হল, সেটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কেন্দ্রও প্রশ্ন তুলেছে, ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ব্যাঙ্কগুলির কাজকর্ম খতিয়ে দেখা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দায়িত্ব। তা হলে কি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অন্দরেও কেউ কেলেঙ্কারিতে জড়িত? নজরদারিতে কি ফাঁক রয়েছে? তা না হলে ২০১১ থেকে সাত বছর ধরে এত বড় কেলেঙ্কারি নজর এড়াল কী করে?
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, যে কোনও গয়না ব্যবসায়ীই বিদেশ থেকে হিরে-মুক্তো আমদানির জন্য ঋণ নেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের ১০% হারে সুদ গুনতে হয়। নীরব তার বদলে দেশীয় ব্যাঙ্কের বিদেশি শাখা থেকে বিদেশি মুদ্রায় ঋণ নিয়েছিলেন। তাতে কম সুদ দিতে হয়। সে জন্য পিএনবি-র ‘লেটার অব আন্ডারটেকিং’ বা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি কাজে লাগান তিনি। যার অর্থ, নীরব বিদেশি মুদ্রার ঋণ শোধ না করলে পিএনবি তা শোধ করবে। ১০০ টাকার ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির জন্য পিএনবি-র উচিত ছিল ১১০ টাকার সম্পত্তি দাবি করা। তা হয়নি। এগুলো কী করে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নজর এড়াল? রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্র বলছে, আগে ব্যাঙ্কগুলির বাছাই করা শাখায় অডিট করা হত। কিছু লেনদেন খুঁটিয়ে দেখা হত। এখন ব্যাঙ্কের নিজস্ব অডিট বা পেশাদার অডিট সংস্থার উপরেই নির্ভর করা হয়। সেখানেই গলদের সম্ভাবনা।