প্রতীকী চিত্র।
অসহায় বোধ করছেন কর্নাটকের চিকিৎসকরা। একদিকে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। অন্য দিকে, সরকারি হাসপাতালগুলিতে এই বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা চালানোর মতো পরিকাঠামো নেই। উপায় না থাকায় প্রতিদিন বহু রোগীকে মৃত্যু মুখে এগিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন ডাক্তাররাই। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘এক একদিন ৩০ জন মরণাপন্ন রোগীর মধ্যে থেকে বেছে নিতে হচ্ছে মাত্র একজনকে। বাকিরা দু’একদিনের মধ্যেই মারা যাবেন জেনেও। কারণ হাসপাতালে একটি মাত্র আইসিইউ শয্যা ফাঁকা রয়েছে।’’
কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর সরকারি হাসপাতালগুলিতেই এই অবস্থা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে কর্নাটকে। সংখ্যাটা প্রতিদিনই একটু করে বাড়ছে। বেঙ্গালুরুর সরকারি কোভিড হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসক শিল্পা জানাচ্ছেন, অভাব শুধু আইসিইউ শয্যারই নয়। ঘাটতি রয়েছে চিকিৎসক, নার্সের সংখ্যাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘গত দু’সপ্তাহে বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৭০ জন রোগীর একটি ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলেন মাত্র ২ জন চিকিৎসক। গত এক সপ্তাহে চিকিৎসক আর রোগীর এই অনুপাত অত্যন্ত বিপজ্জনক জায়গায় এসে পৌঁছেছে।’’
সংক্রমণের নিরিখেও দেশে এই মুহূর্তে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কর্নাটক। গত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে একদিনে ৪৭ হাজার ৫৬৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এই রাজ্যে। সরকারি হাসপাতালের ওই চিকিৎসকের বক্তব্য, ‘‘গত দু’সপ্তাহে মাত্রা ছাড়িয়েছে করোনা সংক্রমণ। শুধু বেঙ্গালুরুতেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা রেকর্ড ছুঁয়েছে।’’
এর পাশাপাশি অক্সিজেন ঘাটতির সমস্যাও রয়েছে। বেঙ্গালুরুর আর এক কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসক নবীন জয়রাজের কথায়, ‘‘প্রত্যেক রোগীরই অক্সিজেন দরকার। অথচ আমরা সবাইকে দিতে পারছি না। চোখের সামনে দেখছি আত্মীয়দের কষ্ট পেতে দেখে তাঁর পরিজনেরা কী মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এ সব দেখে অসহায় বোধ করছি আমরা।’’
চিকিৎসকরা পিপিই কিট পরে টানা ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা রোগীর চিকিৎসা করছেন কর্নাটকে। তাঁরা জানাচ্ছেন, সব রকম প্রতিকূলতার মধ্যেও কাজ করে চলেছেন তাঁরা। কারণ এই সময়টা কঠিন। আর ভয়াবহ। তাই একে অপরকে সাহায্য করতেই হবে।
প্রসঙ্গত, দু’ সপ্তাহের জনতা কার্ফু-র পর শুক্রবার কর্নাটকে পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছেন বিএস ইয়েদুরাপ্পার সরকার।