—ফাইল চিত্র।
জাতীয় শিক্ষানীতি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী— সোমবার জাতীয় আলোচনাসভায় এই অভিযোগ করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, কেন্দ্রীকরণপন্থী এই নীতিতে রাজ্যের ভূমিকা ক্ষুণ্ণ হবে। ভারতের মতো বৈচিত্রপূর্ণ দেশে রাজ্যের মতামত গুরুত্ব না-পেলে শিক্ষাক্ষেত্রে সুফল মিলবে না। জাতীয় নীতিতে নমনীয়তার অভাবের অভিযোগও করেছেন পার্থ।
শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা বলেছি, প্রাথমিক ভাবে দেখে মনে হচ্ছে উচ্চশিক্ষাকে কেন্দ্রীকরণ এবং বাণিজ্যকরণের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর ফলে রাজ্যগুলির ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে।” জাতীয় শিক্ষানীতিতে বহু ভাষা চালু করা, স্নাতক স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে দেশ জুড়ে একই পরীক্ষা, এম ফিল কোর্স বন্ধ করার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার বিরোধিতা করেছে রাজ্য। বাংলাকে কেন ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে রাখা হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাংলা ভাষায় যে বিশাল সাহিত্যভাণ্ডার, যে ঐতিহ্য রয়েছে, যে ভাষায় জাতীয় সঙ্গীত রচনা হয়েছে, তাকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। এবং বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার তালিকায় আনার কথা বলেছি।”
বৈঠকে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ স্পষ্টই জানিয়েছেন, শিক্ষানীতি সফল করতে প্রয়োজন কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়। তিনি বলেন, “শিক্ষা কেন্দ্র এবং রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত। তাই শিক্ষানীতির সফল প্রয়োগের জন্য তাদের মধ্যে যোগাযোগ, সমন্বয় জরুরি।” পাশাপাশি তিনি রাজ্যপালদের ভূমিকার উপরেও জোর দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি চান, সমস্ত রাজ্যপাল তাঁদের নিজেদের মতো করে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট থিম-নির্ভর আলোচনা করুন এবং যাবতীয় পরামর্শ কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকে পাঠান।
আরও পড়ুন: শিক্ষানীতি নিয়ে কথা চান মোদী, কেন এড়ানো হল সংসদ, প্রশ্ন
আরও পড়ুন: অক্ষরজ্ঞান বেড়েছে, প্রশ্নে অনলাইন পাঠ
অন্য দিকে নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে রাজ্যের আপত্তির কারণগুলি জানিয়ে পার্থের দাবি, ‘‘জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে পর্যাপ্ত আলোচনা করার সময় দেওয়া হোক। যাতে আমরা সকলের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি।’’ শিক্ষাক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পার্থ বলেন, “পরিকাঠামোগত বদল এবং শিক্ষা পদ্ধতি বদলের কথা বলা হয়েছে। অথচ বোঝা যাচ্ছে না এর আর্থিক দায়িত্ব কতটা কেন্দ্রের, আর কতটা রাজ্যের।’’ এমনকি, জাতীয় শিক্ষানীতিতে জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে খরচের কথা বলা হয়েছে। তা যথেষ্ট কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছে। খরচ কী ভাবে করা হবে তা-ও স্পষ্ট নয়, অভিযোগ রাজ্যের।