Farm Laws

নতুন আইন নিয়ে কৃষকদের কাছে করজোড়ে প্রার্থনা মোদীর

মোদী বলেন, “আজ যারা কৃষি আইন নিয়ে আওয়াজ তুলছে, এক সময় তারাই কৃষি আইনের পক্ষে ছিল। কৃষিক্ষেত্রে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।”

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:১২
Share:

নরেন্দ্র মোদী।

দেশে কৃষক আন্দোলন নিয়ে ফের বিরোধীদের নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই আন্দোলনের পিছনে ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের কৃষক সম্মেলনে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে কৃষি আইন নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে কৃষকদের বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করেছেন মোদী। এর পরই করজোড়ে কৃষকদের কাছে তিনি আর্জি জানান, নতুন আইনের উপর আপনারা ভরসা রাখুন।

মোদী বলেন, “কৃষি আইন নিয়ে ভুল বোঝানো হচ্ছে। কৃষকদের স্বার্থেই এই সংস্কার করা হয়েছে। দেশের কৃষিক্ষেত্র এবং কৃষকরা পিছিয়ে থাকবে, এটা হয় না। তাই গত ৬ বছর ধরে কৃষক এবং কৃষিক্ষেত্রে নানা সমস্যার কথা বিবেচনা করেই সরকার সেই কাজ করেছে।” তবে কৃষি আইন নিয়ে যে ধারণা তৈরি হয়েছে কৃষকদের মনে, তা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত বলেই মনে করেন তিনি। মোদী বলেন, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে একটা ভীতি তৈরি হয়েছে কৃষকদের মধ্যে। কিন্তু সরকার তাঁদের আশ্বাস দিচ্ছে সহায়ক মূল্য যেমন আগে ছিল তেমনই থাকবে। এটা তুলে নেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে অহেতুক ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।”

মান্ডি ব্যবস্থার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন মোদী। তাঁর কথায়, “কৃষকদের হাতে বিকল্প ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মনে করলে মান্ডিতে তাঁদের ফসল বিক্রি করতে পারেন। যদি সেখানে বিক্রি করতে না চান তাঁরা বাইরেও বিক্রি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কৃষকদের খোলা ছুট দেওয়া হয়েছে।”

কৃষকদের সুবিধার জন্য কিসান ক্রেডিট কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু আগে এই সুবিধা সব কৃষক পেতেন না বলে দাবি করেছেন মোদী। সেই সঙ্গে তিনি এটাও জানিয়েছেন, কৃষিক্ষেত্রে যে ভাবে গত ৫-৬ বছর ধরে প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে কৃষকদের জন্য, বিশ্বজুড়ে সেই প্রচেষ্টা বহু প্রশংসিত হয়েছে।

মোদী বলেন, “আজ যারা কৃষি আইন নিয়ে আওয়াজ তুলছে, এক সময় তারাই কৃষি আইনের পক্ষে ছিল। কৃষিক্ষেত্রে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।” এর পরই কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, “সেই সব গালভরা প্রতিশ্রুতি গেল কোথায়? আমি চাই, কৃষকরা তাদের জিজ্ঞাসা করুন।”

মোদী আরও বলেন, “মধ্যপ্রদেশে তো কংগ্রেস সরকার ছিল। দু’বছর আগে সেই সরকার কৃষকদের সমস্ত ঋণ মকুবের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু সেই আশ্বাস তিমিরেই থেকে গিয়েছে। তখন কোনও প্রতিবাদ, বিক্ষোভ হয়নি।”

রাতারাতি এই সংস্কার করা হয়নি। গত ২০-৩০ বছর ধরে কেন্দ্র-রাজ্য সবিস্তারে আলোচনা করেছে এই সংস্কার নিয়ে। কৃষি বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ এবং বহু প্রগতিবাদী কৃষকরা এই সংস্কারের পক্ষে দীর্ঘ দিন ধরেই সওয়াল করে আসছিলেন। এমনটাই জানিয়েছেন মোদী।

কৃষকদের উদ্দেশে মোদীর বার্তা, সরকার যদি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য তুলেই নিত তা হলে কেন স্বামীনাথন কমিশনের রিপোর্ট প্রয়োগ করবে? এর পরই বিরোধীদের আক্রমণ করে তাঁর মন্তব্য, “যারা কৃষকদের নাম করে এই আন্দোলন শুরু করেছে, তারাও এক সময় ক্ষমতায় ছিল। সরকারের অঙ্গ ছিল। তখন তারা কী করেছিল, আজ গোটা দেশের তা স্মরণ করা দরকার। আমি তাদের সেই কাজগুলোকেই আজ দেশবাসী এবং কৃষকদের সামনে তুলে ধরতে চাই।”

তাঁর কথায়, “আজ যারা কৃষি আইনের বিরোধিতা করছে, তারা কিন্তু সংস্কারের বিরোধী নয়। কিন্তু তাদের ক্ষোভ এটাই যে, যে সংস্কার তারা করতে পারেনি, সেটা মোদী করে দিলেন। তাই আমি সেই সব রাজনৈতিক দলগুলোকে বলতে চাই, আপনারা এর কৃতিত্ব নিন। কিন্তু কৃষকদের বিভ্রান্ত করা বন্ধ করুন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement