ছবি পিটিআই।
গত বছর নভেম্বর মাসে নাশিকের পেঁয়াজ চাষি সঞ্জয় শাঠে ৭৫০ কুইন্টাল পেঁয়াজ বেচে পেয়েছিলেন ১০৬৪ টাকা। অর্থাৎ, কিলো প্রতি ১ টাকা ৪১ পয়সা। ৪০ কিলোমিটার দূরের কিসান মান্ডিতে সেই পেঁয়াজ নিয়ে যেতে গাড়িভাড়া এবং মজুরি বাবদ খরচ হয়েছিল আরও ১১০০ টাকা। এই লোকসানে ক্ষিপ্ত সঞ্জয় বিক্রির পুরো টাকাটাই মানি-অর্ডার করে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ত্রাণ তহবিলে। পেঁয়াজ চাষির এই দুরবস্থা শোরগোল ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে।
এক বছর পরে, অনেক বাজারে যথন ১৪০ টাকা করে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, তখনও দু’বেলা রুটি জুটছে না সঞ্জয়ের। কারণ, তাঁর পাঁচ একর জমির পেঁয়াজের প্রায় পুরোটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে অতিবৃষ্টিতে। বৃহস্পতিবার নাশিক থেকে ফোনে সঞ্জয় বলেন, ‘‘গত বার অতি ফলনের জন্য পেঁয়াজ বিক্রি হয়নি। গরুকে খাইয়েও শেষ করতে পারিনি। এ বার উল্টো। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে যে পেঁয়াজ লাগিয়েছিলাম, বৃষ্টিতে তার প্রায় পুরোটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মহাজন বার বার ফোন করছেন। বলছেন, কুইন্টাল পিছু ৮ হাজার টাকা দেবেন। কিন্ত গোটা নাশিকে পেঁয়াজ কোথায়!’’ সঞ্জয় জানান, নাশিকে এক একর জমিতে ১৫০ কুইন্টালের মতো পেঁয়াজ ফলে। এ বার সেখানে পেঁয়াজ হয়েছে গড়ে মাত্র ১০ কুইন্টাল করে।
একই কথা আর এক পেঁয়াজ-চাষি খন্ডু বোরগুড়ের। খন্ডু বলেন, ‘‘গত জানুয়ারিতে ৫০ পয়সা কিলো দরে পেঁয়াজ বেচেছি। আপনারা বাজার থেকে সেই পেঁয়াজ ২০ টাকা করে কিনেছেন। সে বারও মহাজনের কাছ থেকে নেওয়া ২ লক্ষ টাকা শোধ করতে পারিনি। এ বারও এই অবস্থা। ধারে গলা পর্যন্ত ডুবে গেছি।’’ রমজান পাঠান নামের আর এক চাষি বলেন, ‘‘পেঁয়াজ চাষিদের নসিবই এমন। অতিফলন হলেও মরবে। আর ফলন না হলে তো কথাই নেই। আমাদের বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসবে না।’’
তবে আশায় বুক বেঁধে ফের মাঠে নেমেছেন সঞ্জয়েরা। সঞ্জয় বলেন, ‘‘আবার ধার করে পেঁয়াজের বীজ বুনতে শুরু করেছি। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পেঁয়াজ উঠবে। এ বার মার খেলে পরিবারকে নিয়ে কোথায় দাঁড়াতে হবে, ভাবতেও পারছি না।’’