হান্নান মোল্লা। ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৬-য় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ২০২২-এর ১৫ অগস্টের মধ্যে তিনি চাষিদের আয় দ্বিগুণ করে দেবেন। এক মাস পরে সেই লক্ষ্য পূরণ হওয়ার কথা। তার এক মাস আগে আজ লোকসভায় এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে মোদী সরকার জবাব এড়িয়ে গেল। তার বদলে ২০১৩-র কৃষকদের আয়ের সঙ্গে ২০১৮-র কৃষকদের আয়ের তুলনা করে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর দাবি করেছেন, দাবি, চাষিদের আয় এই পাঁচ বছরে অনেকটাই বেড়েছে। ২০১৩-য় মাসিক আয় ছিল ৬,৪২৬ টাকা। ২০১৮-তে বেড়ে হয়েছে ১০,২১৮ টাকা। তার জন্য কৃষি মন্ত্রক নিজেই নিজের পিঠও চাপড়েছে। কিন্তু ২০১৬-র তুলনায় ২০২২-এ চাষিদের আয় দ্বিগুণ হয়েছে কি না, তার জবাব মেলেনি।
কৃষক সংগঠনগুলির দাবি, চাষিদের আয় বাড়াতে হলে ফসলের ন্যূনতম দাম বা এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি দিতে হবে। গত ডিসেম্বরে তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন প্রত্যাহারের সময়েও কৃষক সংগঠনগুলিও এই দাবি তুলেছিল। সে সময় কেন্দ্র এই দাবি নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এ বিষয়ে সরকার একটি কমিটি তৈরি করবে। সাত মাস পরে সোমবারই প্রাক্তন কৃষিসচিব সঞ্জয় আগরওয়ালের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার কমিটি গঠন করেছে। তাতে কৃষক সংগঠনগুলির যৌথমঞ্চ সংযুক্ত কিসান মোর্চার তিন প্রতিনিধির নাম দিতে বলা হয়েছিল। আজ মোর্চা নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁদের কোনও প্রতিনিধি এই কমিটিতে থাকবে না। কিসান মোর্চার নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘এই কমিটিতে এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি নিয়ে আলোচনার কোনও সুযোগ নেই। কারণ এই কমিটিতে শুধুই সরকারের প্রতিনিধি ও তার অনুগত লোকজন। প্রাক্তন কৃষিসচিব আগরওয়ালকে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তিনিই তিন কৃষক বিরোধী কৃষি আইনের খসড়া তৈরি করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে নীতি আয়োগের সদস্য রমেশ চাঁদ রয়েছেন। তিনি ছিলেন তিন আইনের মূল হোতা। যে সব বিশেষজ্ঞকে রাখা হয়েছে, তাঁরা সকলেই এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টির বিরুদ্ধে।’’ হান্নান অভিযোগ জানান, অন্যান্য কৃষক নেতা হিসাবে এমন পাঁচ জনকে রাখা হয়েছে, যাঁরা সকলেই কৃষি আইনের পক্ষে, সকলে বিজেপি-আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত। কমিটির কার্যসূচিতেই এমএসপি-কে আইনি গ্যারান্টি দেওয়ার প্রসঙ্গ নেই। হান্নানের অভিযোগ করেন, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করে দেওয়ার মতো প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাষিদের বোকা বানাতে চাইছে কেন্দ্র।