এ বার কি আন্দোলনে ইতি টেনে ঘরে ফিরবেন কৃষকরা? গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
লোকসভার পর রাজ্যসভা। শীতকালীন অধিবেশনের শুরুর দিনে সংসদের দুই কক্ষে ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে গেল কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল, ২০২১। তবে কৃষি আইন নিয়ে বিরোধীরা আলোচনার যে দাবি তুলেছিল তা রাখেনি সরকার।
শীতকালীন অধিবেশন শুরুর ঠিক আগে প্রথামাফিক সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা বিরোধীদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে তৈরি। আসুন, গঠনমূলক বিতর্কে অংশগ্রহণ করি।’’ স্বভাবতই জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা হলে কি সংসদে আইন প্রত্যাহারের পাশাপাশি এ নিয়ে আলোচনাতেও রাজি সরকার? কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, বিরোধীদের আলোচনার দাবি মানল না সরকার পক্ষ। সংসদে কোনও আলোচনা ছাড়া, ধ্বনিভোটেই শেষ পর্যন্ত পাশ হয়ে গেল কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল, ২০২১।
এ নিয়ে মোদী সরকারকে বিঁধতে ছাড়েনি বিরোধীরা। মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী।
অন্য দিকে আলোচনার দাবিতে সংসদ চত্বরে গাঁধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদরা।
কৃষি আইন আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রত্যাহার হওয়ার পর কি রাস্তা ছেড়ে ঘরে ফিরবেন এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলনরত কৃষকরা? এই প্রশ্নের জবাবে কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত বলেন, ‘‘ওই কৃষি আইন আসলে একটা অসুখ। এটা ভাল যে শেষপর্যন্ত তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ বার দ্রুত রাষ্ট্রপতি প্রত্যাহারের বিলে স্বাক্ষর করুন। তা হলেই একমাত্র আমাদের পরবর্তী দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারব। তার মধ্যে যেমন ৭৫০-এর বেশি আন্দোলনরত কৃষকের মৃত্যু রয়েছে তেমনই রয়েছে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ও কৃষকদের উপর মিথ্যে মামলা নিয়ে আলোচনা।
বিরোধী নেতাদের একটি অংশ বলছে, আইন পাশ করানোর সময় কোনও বিতর্কের ধার ধারেনি সরকার। আবার চাপের মুখে, উত্তরপ্রদেশে মুখ পোড়ার ভয়ে যখন আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হচ্ছেন মোদী, তখনও বিতর্কে নামতে চাইল না তারা। বিরোধীদের কটাক্ষ, এর চেয়ে ধারাবাহিক সরকার আর কী হতে পারে!