প্রতীকী ছবি।
হাথরসের ঘটনায় পিছনে চলে গিয়েছে সদ্য সংসদে পাশ হওয়া কৃষি আইন ঘিরে বিক্ষোভ। কিন্তু আজ হিমাচল প্রদেশে অটল সুড়ঙ্গ উদ্বোধনের মঞ্চ থেকে কৃষি আইনের ইতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরে বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হিমাচলের কৃষক সমাজের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘‘ওই আইনের ফলে নিজেদের বাগানে হওয়া আপেল রাজ্যের বাইরে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন কৃষকেরা। আর অটল সুড়ঙ্গের মাধ্যমে সারা বছর ধরে কৃষিজাত পণ্য আনা-নেওয়ার সুবিধে হবে।’’ প্রধানমন্ত্রী যখন কৃষি আইনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তখন ওই বিলগুলি অসংবিধানিক ও রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন আরজেডির রাজ্যসভা সাংসদ মনোজ ঝা।
সংস্কারমুখী ওই কৃষি আইনের ফলে আর্থিক ভাবে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ওই যুক্তিতে সরব রয়েছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্যসভায় ওই বিলগুলি ধ্বনি ভোটে সরকার পাশ করানোর প্রতিবাদে সংসদের বাদল অধিবেশনের বাকি অংশ বয়কট করেন বিরোধীরা। ওই আইনের প্রতিবাদে শাসক জোট ছেড়ে বেরিয়ে যায় শিরোমণি অকালি দলের
মতো বিজেপির পুরনো শরিকও। সে সময়ে এ নিয়ে কার্যত নীরব থাকলেও, আজ হিমাচলে দাঁড়িয়ে বিতর্কিত কৃষি বিল নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর প্রশ্ন, ‘‘হিমাচলে যে আপেল বিক্রি করে কৃষক ৫০ টাকা পান, দিল্লিতে সেই আপেল বিক্রি হয় ১০০ টাকায়। মাঝের টাকা কোথায় যায়?’’
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, কৃষকেরা যাতে ফসলের প্রকৃত দাম পান তাই ওই বিল আনা হয়েছে। শাসক শিবিরের বক্তব্য, গোটা ব্যবস্থায় যে মধ্যসত্ত্বভোগীরা রয়েছেন তাঁদের হটাতেই ওই আইন আনা হয়েছে। মোদী বলেন, ‘‘এর ফলে কৃষকেরা বেশি দামে নিজেদের পণ্য দেশের যে কোনও বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। ফলে বেশি টাকা হাতে পাবেন।’’ এই আইনের ফলে মান্ডি ব্যবস্থা উঠে যাবে বলে যে বিরোধীরা প্রচার করছেন তার বিরোধিতা করে মোদী বলেন, ‘‘যাঁরা রাজ্যের বাইরে বেশি দামে বিক্রি করতে চান তাঁরা তা করতে পারবেন। আবার একই সঙ্গে অতীতের মতোই নিজেদের মান্ডিতে বিক্রি করার সুযোগ থাকবে কৃষকদের কাছে।’’
আরও পড়ুন: হাথরসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন রাহুল-প্রিয়ঙ্কা
গোড়া থেকেই ওই কৃষি আইন নিয়ে বিরোধিতায় সরব রয়েছে কংগ্রেস। আজ তাই কংগ্রেসের ভূমিকার সমালোচনা করে মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস সরকারই প্রথম ওই বিলগুলি এনেছিল। কিন্তু তারা নির্বাচনের কথা ভেবে বিল পাশ এড়িয়ে যায়। আমরা বিলের দাঁড়ি, কমা এক রেখে তা ফের সংসদে আনি এবং কোনও কিছুতে ভয় না পেয়ে তা পাশ করাই।’’ বিজেপির অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবেই কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছেন বিরোধীরা। ফলে কৃষকেরা বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন। সে কারণে আগামী দিনে গোটা দেশে কৃষি বিলের পক্ষে ব্যাপক ভাবে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। এ দিকে গোড়া থেকেই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ওই আইনের ফলে কৃষকেরা ভবিষ্যতে ফসলের ন্যূনতম মজুরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবেন। আজ সে প্রসঙ্গে অবশ্য একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি মোদী।
আরও পড়ুন: এ বার বিহারে ‘ধর্ষিত’ হয়ে আত্মহত্যা দলিত কিশোরীর