Bhagalpur

হয়রানি শেষে বিহারে ঘরে ফিরলেন ফরিদা

২০২১ সালের নভেম্বরে বারাসত থেকে উদ্ধার করে ওই যুবতীকে পাভলভ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। ডাক্তারি রিপোর্ট বলেছে, মেয়েটি এখন মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ।

Advertisement

ঋজু বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৪
Share:

২০২১ সালের নভেম্বরে বারাসত থেকে উদ্ধার করে ওই যুবতীকে পাভলভ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। প্রতীকী ছবি।

শেষ হল অদ্ভুত টানাপড়েন। এক বছর ধরে মা, ভাইদের তীব্র উৎকণ্ঠার শেষে আদরের মেয়ে ফরিদা খাতুন (ওরফে লালি বা ললিতা) ভাগলপুরে ঘরে ফিরলেন। বছরখানেক আগে কিছু মানসিক সমস্যার জেরে বাড়ি ছেড়ে ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছিলেন ফরিদা।

Advertisement

২০২১ সালের নভেম্বরে বারাসত থেকে উদ্ধার করে ওই যুবতীকে পাভলভ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। ডাক্তারি রিপোর্ট বলেছে, মেয়েটি এখন মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। মাস কয়েক আগে পাভলভ থেকে সুস্থ অবস্থায় তাঁকে সমাজকল্যাণ দফতরের জীবন সহায়তা কেন্দ্র প্রত্যয়ের হোমে পাঠানো হয়। কিন্তু বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ দুই রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে ৩২ বছরের যুবতীকে ভাগলপুরে বাড়ি ফেরাতে মাসের পর মাস কাবার।

সোমবার ভাগলপুরে সামাজিক সুরক্ষা দফতরের সহকারী অধিকর্তা বিকাশ কুমারের উপস্থিতিতে মায়ের কাছে ফেরানো হল ফরিদাকে। ইতিমধ্যে দু’বার কলকাতা ঘুরে গিয়েছেন ফরিদার মা মিনা খাতুন। কিন্তু বিহারে মেয়েটিকে ছাড়তে রাজি হয়নি বঙ্গের সমাজকল্যাণ দফতর।

Advertisement

এত দিনের টালবাহানার পিছনে মানসিক হাসপাতালের আবাসিকদের পুনর্বাসনে খামতির কিছু দিকই প্রকট হচ্ছে। পাভলভে কয়েক মাসেও ফরিদার নাম, ঠিকানা ঠিকঠাক জানতে পারেননি আধিকারিকেরা। পাভলভের এক আধিকারিক জানান, মেয়েটির ডাকনাম লালি বলে জানা যায়। তার ভিত্তিতে ললিতা লেখা হয়। ঠিকানা জানা যায়নি, এই কারণ দেখিয়ে মেয়েটিকে পাভলভ থেকে মুক্তির পরে ‘প্রত্যয়’ হোমে রাখার বন্দোবস্ত হয়। সেখানকার পুনর্বাসন প্রকল্পের আধিকারিক অনিন্দিতা চক্রবর্তী বলেন, “ওই যুবতী জানান, তাঁর আসল নাম ফরিদা। বাড়ির ঠিকানাও বলেন তিনি। তবে ভাগলপুর থানা থেকে প্রাথমিক ভাবে মেয়েটির বাড়ির কাউকে খবর দিতে কোনও সাহায্য মেলেনি। আমরা ভাগলপুরে গিয়ে ফরিদার মাকে খুঁজে পাই। গরিব ঘরের মেয়ে ফরিদা। ওঁর ভাই বাজারে মুটের কাজ করেন। মেয়েকে বাড়ি ফেরাতে উতলা হয়ে পড়েন মা, ভাইয়েরা— অনেক বাড়িতেই যা দেখা যায় না।”

তবে এ রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের এক কর্তার কথায়, “মেয়েটিকে বাড়ি ফেরাতে আমরা বিহার সরকারের সমাজকল্যাণ দফতরের ছাড়পত্র খুঁজছিলাম। এটা ওঁর নিরাপত্তার প্রশ্ন।” ফের বিহারে গিয়ে সরকারি কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রত্যয়ের আধিকারিকেরা। মানসিক রোগীদের অধিকার রক্ষা কর্মী রত্নাবলী রায় বলেন, “ওঁর নাম, পরিচয়টুকু জানা গেলে পাভলভ থেকেই হয়তো ফরিদাকে বাড়ি ফেরানো যেত। তা ছাড়া, ২০১৭-র মানসিক স্বাস্থ্য আইন বলছে, সুস্থ হয়ে ওঠা যে-কেউ নিজের সিদ্ধান্তে পরিবারের কাছে বা অন্য কোথাও ইচ্ছেমতো থাকা শুরু করতে পারেন। পুনর্বাসনের পদে পদে পুলিশ নির্ভরতাতেও পরিস্থিতি জটিল হয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement