লরেন্স বিশ্নোই। — ফাইল চিত্র।
লরেন্স বিশ্নোইয়ের পাশে দাঁড়াল তাঁর পরিবার। জেলবন্দী গ্যাংস্টারের মতো তারাও দাবি করল, কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার জন্য সলমন খানকে ক্ষমা চাইতে হবে। সলমনের পরিবারের দিকেও আঙুল তুলল লরেন্সের পরিবার। তাদের আরও অভিযোগ, বিশ্নোই সম্প্রদায়ের আবেগে আঘাত করেছেন সলমনের বাবা। পাশাপাশি লরেন্সের পরিবারের দাবি, তিনি নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। অর্থের জন্য তিনি কাউকে হুমকি দেননি।
লরেন্সের হয়ে মুখ খুলেছেন তাঁর তুতো ভাই রমেশ বিশ্নোই। তিনি একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘সলমন খানের ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমাদের ধর্মীয় ভাবাবেগের সঙ্গে খেলা করছে ওঁর পরিবার। সলমন ক্ষমা না চাইলে আইন আইনের পথে চলবে।’’
কৃষ্ণসার হরিণকে পুজো করেন বিশ্নোই সম্প্রদায়ের মানুষজন। সেই হরিণ হত্যার অভিযোগ রয়েছে সলমনের বিরুদ্ধে। ১৯৯৮ সালে জোধপুরে ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ে গিয়ে সলমন কৃষ্ণসার হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। ২০১৮ সালে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে রাজস্থান হাই কোর্ট। পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সলমন। সেখানে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। অন্য দিকে, ২০১৫ সাল থেকে জেলে রয়েছেন লরেন্স। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালে লরেন্স জেলে বসেই ঘোষণা করেছিলেন, সলমনকে খুন করবেন তিনি। অভিযোগ, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সলমনকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং তা করছেন লরেন্স বিশ্নোই গোষ্ঠীর সদস্যেরা। তার পরেই সলমনের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
রমেশের দাবি, বিশ্নোই সম্প্রদায়ের প্রত্যেক ব্যক্তি সলমনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের সমাজ গাছ এবং বন্যপ্রাণীদের ভালবাসে। গাছ বাঁচানোর জন্য আমাদের ৩৬৩ জন পূর্বপুরুষ প্রাণ দিয়েছেন। সলমন যখন কৃষ্ণসার হত্যা করেছিলেন, তখন প্রত্যেক বিশ্নোই রেগে গিয়েছিলেন। আমরা বিষয়টি আদালতের উপর ছেড়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সম্প্রদায়কে নিয়ে ঠাট্টা করা হয়েছিল। তার পরেই আমরা রেগে যাই। এখন গোটা সম্প্রদায় এই বিষয়ে লরেন্সকে সমর্থন করছি।’’ তিনি এ-ও দাবি করেছেন, সলমন বিশ্নোই সম্প্রদায়কে টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা নিতে অস্বীকার করে। এই নিয়ে সলমনের বাবা সেলিম খানকেও কটাক্ষ করেছেন রমেশ। তিনি বলেন, ‘‘সলমনের বাবা বলেন, লরেন্সের গোষ্ঠী এ সব টাকার জন্য করছে। আমি তাঁকে একটা কথা মনে করাতে চাই যে, এক বার তাঁর ছেলে আমাদের সামনে চেকবই ধরে বলেছিলেন, তাতে ইচ্ছা মতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে নিতে। আমার টাকা চাইলে ওই প্রস্তাব গ্রহণ করতাম।’’
লরেন্সের ভাই রমেশের আরও দাবি, অভিনেতাকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছেন। কিন্তু লরেন্সের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। লরেন্সের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্রের এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকিকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রমেশ। তিনি জানিয়েছেন, লরেন্স এই খুনে দোষী কি না, তা তদন্তে প্রমাণ হবে। আর তিনি এ-ও দাবি করেছেন, টাকার জন্য লরেন্স কখনও কিছু করেননি। তাঁর এবং তাঁর ভাইদের যথেষ্ট জমি এবং অর্থ রয়েছে। লরেন্সের সঙ্গে যখন জেলে রমেশের দেখা হয়েছিল, তখন তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁকে ভুল অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।