শিক্ষাটা কতই না বোঝা এদের কাছে! ছবি-ইন্টারনেট।
সন্তানের জন্মদিনটি পালন করা মানে কি শুধুই তার স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে গিফট-প্যাক শেয়ার করা? নাকি শুধুই আত্মীয়-পরিজন, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ‘ডাইন-আউট’? দিনটিকে স্মরণীয় রাখতে কি আমরা পথশিশুদের আলো দেখানোর মতো কিছু করে দেখাতে পারি না?
তেমন কিছু করে দেখানো যায়, তা দেখিয়ে দিলেন কর্পোরেট চাকুরে সুধীর পিড্ডি। দায়িত্ব নিলেন একেবারেই হতদরিদ্র পরিবারের একটি মেয়ের আজীবন পড়াশুনোর ব্যয়ভার। স্কুল, কলেজের ফি, ইউনিফর্ম, পাঠ্যপুস্তক, লেখাপড়ার সামগ্রী, গৃহশিক্ষকের বেতন, আনুষঙ্গিক খরচখরচা, শিক্ষামূলক ভ্রমণের যাবতীয় খরচই শিশুটিকে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন সুধীর। তাঁর কন্যা শ্রাবণীর চতুর্থ জন্মদিনে। তাঁদের সন্তানের আগের জন্মদিনগুলিও গাছ পুঁতে আর অনাথ আশ্রমে টাকা দিয়ে পালন করেছিলেন বাবা সুধীর ও মা হেমা। এ বছর শ্রাবণী ভর্তি হয়েছে গাড়গের একটি লোয়ার কেজি স্কুলে। যার নাম ‘জেসি স্কুল’। সুধীরের মা এক জন লেখিকা।
সুধীর তাঁর কন্যার প্রতিটি জন্মদিনকেই সামাজিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে স্মরণীয় করে রাখতে চান। এ বার চেয়েছিলেন ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ স্লোগানটিকে কার্যকর করতে।
সুধীরের স্ত্রী হেমা জানিয়েছেন, তাঁরা চেয়েছিলেন একটি সরকারি স্কুলে পড়া হতদরিদ্র মেধাবী শিশুকে ওই সুযোগ দিতে। সে ব্যাপারে তাঁরা সরকারি স্কুলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগও করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা জানতে পারেন, এখন সব সরকারি স্কুলেই বিনা পয়সায় পড়াশুনোর সুযোগ পায় শিশুরা। তখন তাঁরা যান বেসরকারি স্কুলগুলোর কাছে। যেগুলো উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের। বাভানগাড্ডের এসএসকে হাইস্কুলটিকে তাঁরা বেছে নেন শেষ পর্যন্ত। স্কুল কর্তৃপক্ষকে তাঁরাই হতদরিদ্র ও মেধাবী শিশু বেছে দিতে বলেন।
স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল সঞ্জয় মেরওয়াড়ে বলেছেন, ‘‘ওঁরাই আমাদের অনুরোধ করেছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে আমরা স্কুলের টিচার্স কাউন্সিলের বৈঠক ডাকি। সেখানেই ওই শিশুকন্যাটিকে বেচে নেওয়া হয়। মেয়েটির বাবা সদ্য মারা গিয়েছেন। মা বাড়ি বাড়ি ঘুরে গৃহস্থালীর কাজ করে শিশুটিকে পড়াচ্ছিলেন।
আমার-আপনার সন্তানের জন্মদিনটিকে কি এ বার আমরা এই ভাবে পালন করতে পারব?
আরও পড়ুন- সিরিয়ায় কী চলছে বোঝাচ্ছে এই রক্তাক্ত শিশুই! দেখুন ভিডিও