সেই বিতর্কিত ছবিগুলির একটি।
জলার ধারে লাল কাপড়ে ঢাকা টেবিল। তাতে রাখা আছে অনেক খাবার। সামনে দাঁড়িয়ে দু’টি শিশু। এক জন মলিন পোশাকে, অন্য জনের খালি গা। সামনে খাবার, অথচ চোখমুখ ঢেকে রয়েছে তারা।
এমনই আবহে অনেকগুলি ছবি। ছবিটি ভারতের গ্রামের। দরিদ্র নারী, পুরুষ খাবার টেবিলের সামনে চোখ বন্ধ করে রয়েছেন। আর ভারতের গরিবিকে তুলে ধরে চিত্র সাংবাদিক বলছেন, ‘‘ওঁদের কাছে টেবিলটা আমিই নিয়ে গিয়েছিলাম। খাবারগুলোও সত্যিকারের নয়। ওঁদের বলেছিলাম, আপনারা ভাবুন, প্লেটে কী কী থাকলে আপনাদের ভাল লাগতো!’’
ভারতের দারিদ্র নিয়ে এমন ‘রসিকতা’ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবল ভাবে সমালোচিত ইতালির বিখ্যাত চিত্রসাংবাদিক অ্যালেসিও মামো। ইনস্টাগ্রামে ‘ড্রিমিং ফুড’ নামে একটি ফোটো-সিরিজ প্রকাশ করেছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ আর মধ্যপ্রদেশ থেকে ছবিগুলি তুলেছেন তিনি। মামোর যুক্তি, ভারতের ওই রাজ্যগুলিতেই সবচেয়ে গরিব মানুষেরা বাস করেন। তাই ছবি তোলার জন্য ওই এলাকাকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
গরিব মানুষকে নিয়ে এমন নির্দয় রসিকতা কেন করা হল, সেই প্রশ্ন তুলে এখন সমালোচনার ঝড় ইন্টারনেটে। টুইটারে এক জন লিখেছেন, এ সব করে রুচির পরিচয় দেননি মামো। তাঁর ভাবনা সংবেদনহীন। আর এক জনের মন্তব্য, ‘‘এমন ছবির প্রয়োজন ছিল না। আর যখন এ সব কাজ সামনেই এসেছে, সমালোচনা তো শুনতেই হবে চিত্রসাংবাদিককে।’’ কারনাজ আমারিয়া নামে এক জন টুইটারে লিখেছেন, ‘‘এ সব নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।’’ ইটালির চিত্রসাংবাদিক মামো ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফোটো অব দ্য ইয়ার, ২০১৮’-র দ্বিতীয় পুরস্কার বিজেতা। ইরাকে ক্ষেপণাস্ত্র হানায় জখম হওয়া ১১ বছর বয়সি বালিকার একটি ছবি তাঁকে এই পুরস্কার এনে দিয়েছে। কিন্তু ভারতের দারিদ্র নিয়ে তাঁর ফোটো সিরিজ তাঁকে সমালোচনার মুখে ঠেলে দিয়েছে।